ব্যাক্তি উদ্যেগে এক কিলোমিটার সড়ক নির্মান

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শ্যামগঞ্জ গ্রামের ইমাম উদ্দিন মুন্সী বাড়ীর মোঃ সফির অ্যামেরিকা প্রবাসী ছেলে জেমস মোহাম্মদ হাফিজের ব্যাক্তিগত অর্থায়নে ও এলাকার লোকজনের স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে প্রায় ১ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক নির্মান এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। উক্ত সড়কটি আজ শুক্রবার সকাল ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি অ্যাডভোকেট রফিক উল্যাহ।
সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যেগে স্থানীয় প্রায় ২০হাজার এলাকাবাসী, কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, একটি হসপিটালের অসুস্থ্য লোকজনের কথা চিন্তা করে অ্যামেরিকা প্রবাসী শ্যামগঞ্জ-আমতলি, রসুলপুর এলাকায় এ সড়ক নির্মান করেন। এসময় উক্ত সড়কটি ইমাম উদ্দিন মুন্সী সড়ক নামকরনের দাবী করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
শ্যামগঞ্জ গ্রামের উত্তর নাপিত বাড়ীর সুবাশ চন্দ্র শীল, সুধীর চন্দ্র শীল, রাখাল চন্দ্র শীলসহ স্থানীয় লোকজন জানান, সদর উপজেলার শ্যামগঞ্জ গ্রামের শ্যামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা ও এতিমখানা, শ্যামগঞ্জ-রসুলপুর নূরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও মিজানুর রহমান মা ও শিশু হসপিটালসহ মন্ডলতলী বাজার, পাটারীরহাঁট, ডা¹াতলী ও ইংলিশ বাজার (আমতলা) যেতে হলে এলাকাবাসীকে অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হতো। বর্ষায় পানির নিচে তলিয়ে যায় সড়কটির বেশ কিছু অংশ।
উদীয়মান তরুন জেমস মোহাম্মদ হাফিজ সম্প্রতি অ্যামেরিকা থেকে গ্রামের বাড়ী আসলে উক্ত সড়কের বেহাল দশা দেখে স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। সড়কটি নির্মানে সহযোগীতা চান, স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসেন মেম্বার, হাসুন্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক খোকন মাষ্টারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের।
জেমস হাফিজের ডাকে সাড়া দিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী স্ব স্ব অবস্থান থেকে এগিয়ে আসেন জমির আইলে মাটি ভরাটসহ প্রতিবন্ধকতা অপসারনে। মাটি ভরাট, বাঁেশর সাকো নির্মান, পুকুরের পাশে বাঁশের বেড়া দেয়াসহ সকল কাজে সহযোগীতা করেন স্থানীয় লোকজন।

জেমস হাফিজ, যার ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে সড়কটি।

রাজের বাড়ীর মোঃ সোলেমান, প্রবাসী আমির হোসেন, আবুল হাসিম, রসুলপুর ভাটের বাড়ীর সাবেক ইউপি সদস্য মোজাম্মেল মেম্বার ও বাসু মিয়া জানান, জেমস হাফিজের এমন জনহীতকর কাজে আমরা আশান্বিত। নিজ উদ্যেগে এ ধরনের কাজ নিঃসন্দেহে এলাকাবাসীর অনেক দূর্ভোগ লাঘব হবে। আমরা দোয়া করি জেমস হাফিজের জন্য।
এ ব্যপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসেন মেম্বার, খোকন মাষ্টার জানান, জেমস হাফিজ ছোট বেলা থেকে প্রবাসে ছিলেন। গত কয়েকদিন আগে তিনি দেশে ফিরে আসলে এলাকার সড়ক সংস্কারে আমাদের সহযোগীতা চান। আমরা সবকিছুর উর্ধ্বে উঠে জেমস হাফিজের এমন কাজে সহযোগীতা করে আসছি।
সিঙ্গাপুর প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার জসিম উদ্দিন আটিয়া জানান, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ”গ্রাম হবে শহর” এ শ্লোগানে স্ব উদ্যেগে সড়ক নির্মানে জেমস হাফিজের আন্তরিকতায় এলাকার মানুষ অনেক খুশি।

ব্যবসায়ী মোহাম্মদ উল্যা আটিয়া জানান, শুধুমাত্র একটি সড়ক নির্মানেই পাল্টে গেছে এলাকার দৃশ্যপট।
এ ব্যপারে জেমস মোহাম্মদ হাফিজ জানান, আমি বিদেশ থেকে এসেছি দীর্ঘদিন পরে। দীর্ঘসময় পর্যন্ত অবহেলিত থাকায় এ গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার মাটির রাস্তা পুকুরে বিলীন হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বিশালাকৃতির গর্ত ও ভাঙ্গাচুরা। মানুষের দূর্ভোগ আমাকে পীড়া দিচ্ছিলো। আমার নিজের সম্পত্তি থেকে মাটি কেটে রাস্তা ভরাট করাসহ গ্রামবাসী নিজেদের গাছ কেটে দিয়েছেন, কেউ শারিরীকভাবে সহযোগীতা করেছেন। এলাকাবাসীর এমন আন্তরিকতা আমাকে বিমুগ্ধ করেছে। আমি কৃতজ্ঞ এলাকার মানুষের প্রতি।