ব্রেকিং:
চার বছর পর সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার? আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা লক্ষ্মীপুরে করোনা উপসর্গে প্রবাসীর মৃত্যু! লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে দিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে করোনা রোগী ৩৭ জন : নতুন করে শিশুসহ আক্রান্ত ৩ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের মারা যাওয়া তরুণের করোনা নেগেটিভ, তিন ভাই বোনের পজেটিভ লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিল এডভোকেট নয়ন লক্ষ্মীপুরে ত্রাণের সাথে ঘরও পেল লুজি মানসম্মত কোন ধাপ অতিক্রম করেনি গণস্বাস্থ্যের কিট পরিস্থিতি ঠিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যদের সাথে পুলিশ সুপারের ভিডিও কনফারেন্স লক্ষ্মীপুরে আরো ৩ জনের করোনা পজেটিভ আপনিকি করোনা পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিট ব্যবহারের বিপক্ষে? লক্ষ্মীপুরে ধান কেটে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিল ছাত্রলীগ লক্ষ্মীপুরে ২০০০ পরিবার পেল উপহার সামগ্রী
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মেইড ইন লক্ষ্মীপুর

আলোকিত লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ৫ অক্টোবর ২০১৯  

ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ অনেক বিশেষায়িত পণ্য উৎপাদন করে থাকে । যেমন- জামদানি শাড়ি, ইলিশ মাছ, মহিষের দই, ঘিগজ মুরি, ফজলি আম ইত্যাদি । এ গুলো বিশ্বের অন্য কোথাও উৎপাদন হয় না। এসব ‘ভৌগলিক নির্দেশক’ পণ্যকে জিআইয়ের অন্তর্ভুক্ত করতে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০১৪ সাল থেকে একটি জেলায়, একটি বিশেষ পণ্য উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের মতে, প্রত্যেক জেলায় একটি করে বিশেষায়িত পণ্য উৎপাদন করে সেগুলোকে ‘ভৌগলিক নির্দেশক’ পণ্য (জিআই) হিসেবে নিবন্ধন করতে পারলে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং হবে। এতে ওই পণ্যের মূল্য বাড়বে, দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।’

ইতোমধ্যে ঢাকা “চেম্বারের পক্ষ থেকে ৭২টি বিশেষায়িত পণ্যের তালিকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়ে। জেলা ভিত্তিক ভাবে বাছাই করে পণ্য গুলোর ব্র্যান্ডিং করবে সরকার। সঠিকভাবে ব্র্যান্ডিং করা গেলে এ পণ্যগুলোর জিআই নিবন্ধন পাওয়া যাবে। তাতে সংশ্লিষ্ট জেলা গুলোর নাম ঐতিহাসিক মর্যাদা পেয়ে দেশ ও বিশ্ব ব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। এ সব পণ্যকে কেন্দ্র করে প্রচুর বৈদেশিক বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসতে পারে। জিআই পণ্য নিবন্ধন না করলে অন্যদেশ আমাদের সম্পদ নিয়ে যেতে পারে।

যেমন: ভারতের অন্ধ প্রদেশ ২০০৯ সালে জামদানিকে তাদের হিসেবে নিবন্ধন করে নাম দিয়েছে ‘উপাদ্দা জামদানি’।

কিন্তু জিআই তালিকায় লক্ষ্মীপুরের নাম বা মেইড ইন লক্ষ্মীপুর দেখতে আমরা জেলাবাসি কতটা প্রস্তুত? আমরা কিভাবে লক্ষ্মীপুর কে দেশবাসি বা বিশ্ববাসির কাছে ঐতিহাসিক করে রাখতে পারি ? ইতোমধ্যে লক্ষ্মীপুরের নামের সাথে ইলিশ, নারিকেল, সুপারি, ধান, সয়াবিন, গিগজ মুরি আর মহিষের দধির পরিচয় মিশে গেছে।

আমরা এতো গুলো ঐতিহাসিক অর্থনৈতিক পণ্য উৎপাদন করলেও সরকারের সিদান্ত অনুসারে মাত্র একটি পন্য কেই বিশ্ব ব্যাপী ব্র্যাডিং করতে পারি, তার গায়েঁ গর্বে সিল দিতে পারি “ মেইড ইন লক্ষ্মীপুর” শিরোনামের। সে পণ্য হতে পারে ইলিশ। আর তা পারি শুধুমাত্র সঠিক তথ্য দিয়েই। কিন্তু বর্তমানে আমাদের ইলিশ সারা দেশে পদ্মার ইলিশ নামেই পরিচিত। ভুল পরিচয়ের এ ব্যর্থতা লক্ষ্মীুপরবাসিরই। কিভাবে ইলিশ হতে পারে মেইড ইন লক্ষ্মীপুর ?

চোখ ভুলিয়ে নি তার দিকে। চকচকে রুপালি রং,আর তুলনাহীন স্বাদের মাছের নাম ইলিশ। বিশ্বের সবচেয়ে সুস্বাদু মাছের অন্যতম একটি মাছ ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ । স্বাদ, গন্ধ ও খাদ্য মানের দিক দিয়ে ইলিশ বাঙ্গালির সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলা নববর্ষের পহেলা বৈশাখের উৎসবের দিন বাঙ্গালীদের অন্যতম আকর্ষণ পান্তা-ইলিশ ভোজ।

ওয়ার্ল্ড ফিশের তথ্য মতে বিশ্বের মোট ইলিশের ৬৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। আর বিশ্বের ১১টি ইলিশ উৎপাদনকারি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১ নম্বরে। কিন্তু মাছ উৎপাদনকারি দেশ হিসাবে বাংলাদেশ বিশ্বে ৪র্থ। ( তথ্য সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো ২০ অক্টোবর ২০১৫)।

বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ইলিশের অবদান ১ দশমিক ১৫ শতাংশ। দেশের মোট মাছের ১২ শতাংশের উৎপাদন আসে ইলিশ থেকে। যার অর্থমূল্য আনুমানিক সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। উৎপাদিত ইলিশের যেটুকু রফতানি হয় তাতে ১৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। দেশের ১৫ জেলার প্রায় পাঁচ লাখ লোক ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত । সারাদেশের ১৫ জেলার ২ লাখ ২৪ হাজার ১০২ জন জেলে সরকারি সুবিধা পায়। আর ইলিশকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুরে ৬২ হাজারের বেশি জেলে মেঘনায় জীবিকা নির্বাহ করে। জেলায় জেলে পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ২ লক্ষের ওপর। ( সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩)

জেলায় প্রতি বছর ইলিশের গড় উৎপাদন ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। একই সময়ে সারাদেশে ইলিশের মোট উৎপাদন গড়ে ৩ লাখ ৪০ হাজার টন। দেশের ১০০টি নদীতে কম বেশি ইলিশ পাওয়া গেলেও ইলিশের প্রজনন ও পরিপক্কতা মেঘনা নদীতেই সবচেয়ে বেশি হয়। দ্বিতীয় অবস্থানে মনে করা হয় পদ্মা কে। এ অঞ্চলের মেঘনা নদীর চাদঁপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার, ভোলার শাহবাজপুর চ্যানেল, তেঁতুলিয়া নদী, পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক ও রামনাবাদ-এই ৫টি চ্যানেলকে ২০০৫ সালে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে।

২০০৮ সাল থেকে সরকার লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট নদীতে জাটকা সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ করে। চাদঁপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনার দূরত্ব ১০০ কিমি । এর মধ্যে লক্ষ্মীপুর অংশের মেঘনার দৈর্ঘ্য ৬৫ কিমি। কিন্তু ডিম ছাড়ার সময় ইলিশ ৭০ থেকে ৭৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। ইলিশ সাগর থেকে যতই নদীর মিষ্টি পানির দিকে আসে, ততই এর শরীর থেকে লবণ কমে যায়, স্বাদ বাড়ে। এ সকল তথ্য সুত্র থেকে জানা যায় বাংলাদেশে যে সুস্বাদু ইলিশ ধরা হয় তার সিংহ ভাগই আসে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা মোহনা থেকে। কিন্তু লক্ষ্মীপুর জেলাবাসির প্রচার প্রচারণার অভাবে পুরো দেশবাসি একটি ভুল তথ্য জেনে যাচ্ছে যে ইলিশ মানে পদ্মার ইলিশ। অথচ বর্তমানে পদ্মা এখন ইলিশই পাওয়া যায় না। পদ্মার ইলিশ মুখে মুখে প্রচলিত একটি কথা ছাড়া বাস্তবে কিছুই না। দৈনিক প্রথম আলোর ২০১৫ সালের ১৯ অক্টোবরের প্রতিবেদন টি পড়লে আমরা বিষয়টি বুঝতে পারি যার শিরোনাম ছিল “রাজশাহীর পদ্মায় ৫০ বছর পর ইলিশ”।

অথচ দেশবাসি মেঘনার ইলিশ কে বলছে পদ্মার ইলিশ। লক্ষ্মীপুরের ইলিশ বিশ্বসেরা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ইলিশের চাহিদা আকাশচুম্বী। দেশ-বিদেশে লক্ষ্মীপুরের ইলিশের চাহিদা ব্যাপক। তাই লক্ষ্মীপুরবাসি ইলিশ কে সারা বিশ্বে পরিচয় করিয়ে দিতে পারি মেইড ইন লক্ষ্মীপুর নামে। সে উদ্যোগ এখনই নেয়া জরুরী।

আলোকিত লক্ষ্মীপুর
আলোকিত লক্ষ্মীপুর
//