ব্রেকিং:
চার বছর পর সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার? আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা লক্ষ্মীপুরে করোনা উপসর্গে প্রবাসীর মৃত্যু! লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে দিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে করোনা রোগী ৩৭ জন : নতুন করে শিশুসহ আক্রান্ত ৩ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের মারা যাওয়া তরুণের করোনা নেগেটিভ, তিন ভাই বোনের পজেটিভ লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিল এডভোকেট নয়ন লক্ষ্মীপুরে ত্রাণের সাথে ঘরও পেল লুজি মানসম্মত কোন ধাপ অতিক্রম করেনি গণস্বাস্থ্যের কিট পরিস্থিতি ঠিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যদের সাথে পুলিশ সুপারের ভিডিও কনফারেন্স লক্ষ্মীপুরে আরো ৩ জনের করোনা পজেটিভ আপনিকি করোনা পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিট ব্যবহারের বিপক্ষে? লক্ষ্মীপুরে ধান কেটে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিল ছাত্রলীগ লক্ষ্মীপুরে ২০০০ পরিবার পেল উপহার সামগ্রী
  • শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

করোনায় বাবা-মাকে হারিয়ে স্কুলছাত্রের ভয়ানক দিনলিপি

আলোকিত লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২০  

চীনের উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর থেকেই স্থানীয় চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং আশাপাশের সবাইকে সতর্ক করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কখন তার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়। পরে এ অভিযোগে তাকে শাস্তিও দেয়া হয়। এর একমাস পর চীনা কর্তৃপক্ষ নোবেল করোনাভাইরাসটিকে চিহ্নিত করে। তার একমাস পর, জানুয়ারির শেষদিকে ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল উহানকে লকডডাউন দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় যোগাযোগব্যবস্থা। এরপর থেকেতো রীতিমতো বিষ্ময় চোখে চীনের দিকে তাকিয়ে থাকলো বিশ্ব। একে একে এই করোনা ছড়িয়ে পড়লো অন্যান্য দেশে। বাড়তে থাকে মৃত এবং রোগীর সংখ্যাও। 

সম্প্রতি ওহানে বসবাস করা এক চীনা শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ওয়েইবো’তে তার করোনাদিনগুলোর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। দিনলিপিগুলোর মাধ্যমে জানা যায় প্রথমে তারা মা, পরে বাবাও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বাবা মারা যাওয়ার পর ঐ শিক্ষার্থী নিজেকেও করোনা রোগী আবিষ্কার করেন। কেউ একজন তার তখনকার অভিজ্ঞতাগুলো ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। ‘ওহান কিশোরীর দিনলিপি’ নামে তার এই অভিজ্ঞতাগুলো সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সাড়া তৈরি করেছে। 

২৩ জানুয়ারি
কর্তৃপক্ষ পুরো শহরটাকে কোয়ারেইন্টানে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমি খুব চিন্তিত। আমাদের সাহায্য দরকার। মা দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।

২৬ জানুয়ারি
মা কল করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন তাকে বর্তমান হাসপাতাল থেকে সংক্রামক ব্যাধির জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল ‘জিনিয়নতান’ -এ বদলি করা হয়েছে। আমি জানি না কোনো ভালো খবর পাবো কিনা।

২৮ জানুয়ারি
মা চিরদিনের জন্য বিদায় নিয়ে চলে গেলেন। এখন তিনি আর আমার কোনো কথার উত্তর দেন না। আমাকে কোনো কাজে সমর্থনও করেন না। আমার মন একদম ভালো নেই।

২৯ জানুয়ারি
বাবার সিটি স্ক্যান শেষ করার জন্য অপেক্ষা করছি। জানি না এটি করতে কতক্ষণ সময় লাগে। ফুটপাতে বসে আমি কখনো এতটা অসহায় বোধ করিনি। এখন মনে হচ্ছে আমার সারাটা জীবনে আর কোনো আলো নেই। এটি সবচেয়ে বড় বেদনা আমার জীবনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাবার পাশে থাকতে হবে আমাকে।

২ ফেব্রুয়ারি
বাবাকে আজ হাসপাতালে চেকআপে সাহায্য করতে এসেছি, যেমটি তিনি গত ২৪ তারিখ মায়ের জন্য করেছিলেন। সারাদিন খুব বৃষ্টি হয়েছিলো। সঙ্গে বিদ্যুৎ চমকানোও ছিলো। আমি আশা করছি বাবাকে আমি শেষবারের মতো ভালো করে আবার দেখতে পারবো। বাবা আমাকে তার কেবিন থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। তার কেবিনে আর কখনো যেতে নিষেধও করেছেন।

৪ ফেব্রুয়ারি
আমি মায়ের কথা স্বপ্নে দেখেছিলাম। কিন্তু তিনি স্বপ্নে ছিলেন না। আমি তাকে খুঁজেছিলাম এবং তার কথা সবাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘আমার মাকে দেখেছো? তিনি জানেন না বা অসুস্থ,  মূলত এই জন্যই তাকে খুঁজেছি।

৬ ফেব্রুয়ারি 
শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হওয়ার যন্ত্রণা বোধ হয় মৃত্যুর চেয়েও যন্ত্রণাদায়ক। মা, তুমি কি বাবাকে স্বর্গে নিয়ে যাবে যেন সে মুক্তভাব শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারে? তুমি আমার জন্য চিন্তা করো না মা। আজ আমি বাবাকে আমার মুখটা মনে করতে বলেছি, আমার কণ্ঠটা আজ আবার মনে করতে বলেছি। আমি যখন ছোট্ট একটা শিশু ছিলাম, তুমি বলতে আমি যদি কখনো হারিয়ে যাই, তুমি আমার শরীরে জন্মদাগ দেখে আমাকে খুঁজে বের করবে। আমি জানি মা, তুমি শেষবার আমাকে যখন দেখেছিলে, আমাকে ঠিকই চিনতে পেরেছিলে।

৭ ফেব্রুয়ারি 
বাবা, আমি তোমাকে হারিয়ে ফেললাম। এখন তুমি গিয়ে মাকে খুঁজে নাও। আর আমার জন্য অপেক্ষা করো। আমরা আবার এক সঙ্গে বাড়ি ফিরবো বাবা।

৮ ফেব্রুয়ারি 
আমি খুবই অসহায়!  আমিও করোনায় আক্রান্ত!

তার হৃদয়বিদারক এই দিনলিপি দেখে অনেকে তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। তার সাথে স্থানীয় সাংবাদিকরাও যোগাযোগ করেছে। দুইদিন আগে তার এক বন্ধু জানিয়েছে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

আলোকিত লক্ষ্মীপুর
আলোকিত লক্ষ্মীপুর
//