ব্রেকিং:
চার বছর পর সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার? আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা লক্ষ্মীপুরে করোনা উপসর্গে প্রবাসীর মৃত্যু! লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে দিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে করোনা রোগী ৩৭ জন : নতুন করে শিশুসহ আক্রান্ত ৩ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের মারা যাওয়া তরুণের করোনা নেগেটিভ, তিন ভাই বোনের পজেটিভ লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিল এডভোকেট নয়ন লক্ষ্মীপুরে ত্রাণের সাথে ঘরও পেল লুজি মানসম্মত কোন ধাপ অতিক্রম করেনি গণস্বাস্থ্যের কিট পরিস্থিতি ঠিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যদের সাথে পুলিশ সুপারের ভিডিও কনফারেন্স লক্ষ্মীপুরে আরো ৩ জনের করোনা পজেটিভ আপনিকি করোনা পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিট ব্যবহারের বিপক্ষে? লক্ষ্মীপুরে ধান কেটে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিল ছাত্রলীগ লক্ষ্মীপুরে ২০০০ পরিবার পেল উপহার সামগ্রী
  • শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ইব্রাহিম (আ.) কর্তৃক পবিত্র কাবাঘর নির্মাণের ঘটনা (শেষ পর্ব)

আলোকিত লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

ইসমাঈলের বিয়ের পর ইব্রাহিম (আ.) তার ফেলে যাওয়া স্বজনদেরকে দেখার জন্য এখানে আসলেন। কিন্তু (এসে) ইসমাঈল (আ.)-কে পেলেন না। পরে তার স্ত্রী নিকট তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। স্ত্রী বললেন, তিনি আমাদের খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে গেছেন। পুনরায় তিনি পুত্রবধূকে তাদের জীবনযাত্রা ও অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। পুত্রবধূ বলল, আমরা অতিশয় দুরবস্থা, টানাটানি এবং ভীষণ কষ্টে আছি। সে ইব্রাহিম (আ.) এর নিকট (তাদের দুর্দশার) অভিযোগ করল। তিনি (পুত্রবধূকে) বললেন, তোমার স্বামী (বাড়ি) আসলে তাকে আমার সালাম জানিয়ে বলবে, সে যেন তার ঘরের দরজার চৌকাঠ বদলিয়ে নেয়। (১ম পর্বের অংশবিশেষ)।

১ম পর্বের পর থেকে...

ইসমাঈল (আ.) যখন (বাড়ি) আসলেন, তখন তিনি (ইব্রাহিম (আ.) এর আগমন সম্পর্কে) একটা কিছু আভাস পেলেন। (স্ত্রীকে) বললেন, তোমাদের নিকট কেউ কি এসেছিলেন? স্ত্রী বলল,হ্যাঁ! এমন এমন আকৃতির একজন বৃদ্ধ এসেছিলেন। আপনার ব্যাপারে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন। আমি তাকে আপনার) সংবাদ জানালাম। তিনি পুনরায় আমাকে আমাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। আমি তাকে জানালাম যে, আমরা অত্যন্ত  কষ্ট ও অভাবে আছি।

ইসমাঈল বললেন, তিনি কি তোমাকে আর কোনো ওয়াসীয়াত করে গেছেন? স্ত্রী উত্তর দিলো,হ্যাঁ! তিনি আমাকে আদেশ দিয়ে গেছেন, যেন আপনাকে তার সালাম পৌঁছাই  এবং তিনি  বলে গেছেন, আপনি যেন আপনার ঘরের দরজার চৌকাঠ বদলিয়ে ফেলেন। ইসমাঈল (আ.) বললেন, তিনি ছিলেন আমার পিতা এবং তিনি আমাকে আদেশ দিয়ে গেছেন, যেন তোমাকে আমি আলাদা করে দেই। সুতরাং 
তুমি তোমার (পিত্রালয়ে) আপন লোকদের নিকট চলে যাও। (এ বলে) ইসমাঈল (আ.) তাকে তালাক দিয়ে দিলেন এবং জুরহুম সম্প্রদাযের অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করলেন।

অতঃপর আল্লাহ তায়ালা যতদিন চাইলেন, ইব্রাহিম (আ.) ততদিন এদর থেকে দূরে রইলেন। পরে আবার দেখতে আসলেন। কিন্তু এবারো ইসমাঈল (আ.) পেলেন না। তিনি পুত্রবধূর ঘরে প্রবেশ করলেন এবং তাকে ইসমাঈল (আ.) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। স্ত্রী জানালেন, তিনি আমাদের খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে গেছেন। ইব্রাহিম (আ.) জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কেমন আছ? তিনি তার নিকট তাদের জীবনযাত্রা ও সাংসারিক অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। পুত্রবধূ জবাব দিলেন, আমরা ভালো অবস্থা ও সচ্ছলতার মধ্যেই আছি। (এ বলে) তিনি মহান আল্লাহর প্রশংসা করলেন। ইব্রাহিম (আ.) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের প্রধান খাবার কি? পুত্রবধূ উত্তরে বললেন, গোশত। তিনি আবার জানতে চাইলেন, তোমাদের পানীয় কি? তিনি জবাব দিলেন, পানি। ইব্রাহিম (আ.) প্রার্থনা করলেন, ‘আয় আল্লাহ! তাদের গোশত ও পানিতে বরকত দান করো।’

নবী (সা.) বলেন ওই সময় তাদের (সেখানে) খাদ্যশস্য উৎপন্ন হতো না। যদি হতো, ইব্রাহিম (আ.) সে সম্পর্কেও  তাদের জন্য দোয়া করতেন।

বর্ণনাকারী বলেন, কোনো লোকই মক্কা ব্যতীত অন্য কোথাও শুধু গোশত এবং পানি দ্বারা জীবন নির্বাহ করতে পারে না। কারণ, শুধু গোশত ও পানি (সব সময়) তার প্রকৃতির অনুকূল হতে পারে না।

ইব্রাহিম (আ.) (আলাপ শেষে) পুত্রবধূকে বললেন, তোমার স্বামী যখন আসবে, তখন তাকে আমার সালাম বলবে এবং তাকে (আমার পক্ষ থেকে) হুকুম করবে, সে যেন তার দরজার চৌকাঠ বহাল রাখে।

অতঃপর ইসমাঈল (আ.) যখন (বাড়ি) আসলেন, (স্ত্রীকে) বললেন, তোমাদের কাছে কেউ এসেছিল কি? স্ত্রী বললেন, হ্যাঁ, একজন সুন্দর আকৃতির বৃদ্ধ এসেছিলেন। স্ত্রী তার প্রশংসা করলেন। তারপর বললেন, তিনি আমাকে আপনার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছেন, আমি তাকে (আপনার) সংবাদ দিয়ে দিয়েছি। তিনি আমাকে আমাদের জীবন-যাপন সম্পর্কেও জিজ্ঞেস করেছেন, আমি তাকে জানিয়ে দিয়েছি যে, আমরা ভালো অবস্থায় আছি। ইসমাঈল জানতে চাইলেন, তিনি কি তোমাকে আর কোনো ব্যাপারে আদেশ দিয়ে গেছেন? স্ত্রী বললেন,
হ্যাঁ, আপনাকে সালাম বলেছেন আর আদেশ দিয়ে গেছেন, যেন আপনি আপনার দরজার চৌকাঠ বহাল রাখেন। ইসমাঈল (আ.) বললেন, ইনিই আমার আব্বাজান। আর তুমি হলে চৌকাঠ। তোমাকে (স্ত্রী হিসেবে) বহাল রাখার আদেশ আমাকে দিয়ে গেছেন।

ইব্রাহিমম (আ.) মহান আল্লাহর ইচ্ছায় কিছুদিন এদের কাছ থেকে দূরে রইলেন। এরপর আবার তাদের নিকট আসলেন। (এসে দেখলেন) ইসমাঈল (আ.) জমজমের নিকটস্থ একটি গাছের নীচে বসে নিজের তীর মেরামত করছেন। পিতাকে যখন (আসতে) দেখলেন, দাঁড়িয়ে তার দিকে অগ্রসর হলেন। অতঃপর একজন পিতা পুত্রের সঙ্গে এবং পুত্র পিতার সঙ্গে দেখা হলে যা করে তারা তা-ই করলেন।

তারপর ইব্রাহিম (আ.) বললেন, হে ইসমাঈল! আল্লাহ তায়ালা আমাকে একটি কাজের আদেশ করেছেন। ইসমাঈল (আ.) উত্তর দিলেন, আপনার রব আপনাকে যা হুকুম করেছেন, তা করে সমাপ্ত করুন। ইব্রাহিম (আ.) বললেন, তুমি আমাকে সাহায্য করবে কি? ইসমাঈল (আ.) বললেন, হ্যাঁ; নিশ্চয়ই আমি আপনার সাহায্য করব।

ইব্রাহিম (আ.) বললেন, আল্লাহ তায়ালা আমাকে এখানে একটি ঘর বানাবার আদেশ দিয়েছেন। (এ বলে) তিনি উঁচু টিলাটির দিকে ইঙ্গিত করলেন (এবং জায়গাটি দেখালেন)। তখনি তারা উভয়ে কাবাঘরের প্রাচীরে উঠাতে লেগে গেলেন। ইসমাঈল (আ.) পাথর যোগান দিতেন এবং ইব্রাহিম (আ.) গাঁথুনী করতেন। যখন দেয়াল উঁচু হয়ে গেল, তখন ইসমাঈল (আ.) মাকামে ইব্রাহিম নামক মশহুর পাথরটি আনলেন এবং ইব্রাহিম (আ.) এর জন্য তা (যথাস্থানে) রাখলেন। ইব্রাহিম (আ.) এর ওপর দাঁড়িয়ে ইমারত তৈরি করতে লাগলেন এবং ইসমাঈল (আ.) তাকে পাথর যোগান দিতে লাগলেন। আর উভয়ে এ প্রার্থনা করতে থাকলেন, ‘হে আমাদের রব! আমাদের থেকে (এ কাজটুকু) কবুল করুন! নিশ্চয়ই আপনি (সবকিছু) শুনেন ও জানেন।’

আবার তারা উভয়ে ইমারত তৈরি করতে লাগলেন। তারা কাবাঘরের চারদিকে ঘুরছিলেন এবং উভয়ে দোয়া করছিলেন,

رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيم

‘হে আমাদের রব! আমাদের এ শ্রমটুকু কবুল করে নিন। নিশ্চয়ই আপনি সব শুনেন ও জানেন।’ (সূরা: আল বাকারাহ, আয়াত: ১২৩, বুখারী-হা: ৩৩৬৪, ই:,ফা:,বাং:,হা: ৩১২২,আ:,প্র:,হা: ৩১১৪)।

শিক্ষা:

(১) শুধুমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই প্রয়োজনে স্ত্রী পুত্র ত্যাগ করা যায়। যেমনটি ইব্রাহিম (আ.) করেছিলেন।

(২) সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট ও তার ওপরেই ভরসা করতে হবে।

(৩) প্রত্যেক ঈমানদার নারীদেরকে হাজেরার মতো ধৈর্যশীল ও ঈমানের প্রতি অবিচল থাকতে হবে।

(৪) সন্তান-সন্ততি ও পরিবারের জন্য দোয়া করা।

আলোকিত লক্ষ্মীপুর
আলোকিত লক্ষ্মীপুর
//