কমলনগরে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

মিথ্যা মামলা দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কমলনগরের এক পরিবারের বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানে জানা গেছে,

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার ৭ নং হাজিরহাট ইউনিয়নের চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের মাহমুদুল্লাহর স্ত্রী নূরজাহান বেগম (৬৫), কন্যা আনোয়ারা বেগম (৩৮),মনোয়ারা বেগম(৩৪), আব্দুর রহিম (৩০),আব্দুল খালেক? ৩২)এলাকায় অনৈতিক কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছে।

মেয়েরা বিভিন্ন পুরুষের সাথে অনৈতিক কাজ করাসহ ছেলেরা ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।

যুবসমাজ ধ্বংসকারী মরণঘাতী ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করে একাধিকবার জেল খেটেছেন তারা।

থানায় মামলা চলমান রয়েছে একাদিক। জামিনে এসে আবারও তারা ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।এ নিয়ে স্থানীয় আব্দুল্লাহ আল জুনায়েদী জামে মসজিদের মুসল্লিরা বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তারা মানছে না। বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। অতিষ্ঠ হয়ে উক্ত মসজিদ কমিটি তাদের সসমাজচ্যুত করেছে বলে কমিটির সভাপতি জানিয়েছেন।

দেহপসারিণী কলগার্লের মত জঘন্য কাজে জড়িয়ে পড়লে এক এক করে মেয়েদের স্বামীরা ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে চলে যায়। কেউ প্রতিবাদের সাহস দেখায় না। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও জামে মসজিদের সভাপতি বাহার উদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (৬৭) কে তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে, কুৎসা রটিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। শুধু তাই নয় রিনা, অনু বেগম ও মনোয়ারার মেয়ে তাসলিমা আক্তার এর কাছে রাতে বিরাতে বিভিন্ন পুরুষের আসা-যাওয়া করার কারণে এলাকায় তারা দম্ভ দাম্ভিকতার সাথে চলে।

সামাজিক স্থানীয় প্রশাসনকে তারা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তুচ্ছ ঘটনায় থানায় কিবা আদালতে মামলা দিয়ে মিমাংশার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে বলে ভুক্তভোগীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জানান। বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত হওয়ার কারণে তারা একেক মামলায় একেক নামের ব্যক্তিকে স্বামী বলে পরিচয় দিয়েছেন।

জিআর ২৬/১৭ মামলার অভিযোগপত্রে মনোয়ারা বেগমের স্বামী জামাল উদ্দিন, সম্প্রতি করা জিআর মামলা ( ১০/১৫১) আহসানুল্লাহ নামে আরেক ব্যক্তিকে স্বামীর পরিচয় দিয়েছেন মনোয়ারা বেগম। সম্প্রতি মনোয়ারা বেগমের ছেলে মনির হোসেন পাশেরবাড়ি সাইফুলের স্ত্রী নূরজাহান বেগমকে উদ্দেশ্য করে অহেতুক গালমন্দ করতে থাকে। এতে প্রতিবাদ করতে গেলে আহম্মদ উল্লাহর ছেলে আব্দুর রহিম, আব্দুল খালেক, মনোয়ারা বেগম মনি, অনু বেগমসহ লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়।

এতে নূরজাহান বেগম ও তার ছেলে রিয়াজ হোসেন (২২) মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। তাদের আত্মচিৎকারে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাজিরহাট বাজারে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে সেখানেও তারা হামলা চালায়। এতে স্থানীয় চিকিৎসক ও হাজিরহাট বাজার বণিক সমিতির সেক্রেটারি ইসমাইল হোসেন বিপ্লব বাধা দেয়।

বাধা দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে রিনা বেগম বাদী হয়ে কমলনগর থানায় ডাক্তার ইসমাইল হোসেন বিপ্লবকে জড়িয়ে সাতজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। স্থানীয়দের মধ্যে আক্তার প্রফেসর, মোস্তফার স্ত্রী রিনা বেগম, মোহাম্মদ হাসানের স্ত্রী সালমা আক্তার, সাইফুলের স্ত্রী নুরজাহান, মৃত সৈয়দ আহমেদের ছেলে হারুন, মোবারক আলীর ছেলে মোহাম্মদ হাসান, কামাল মাস্টারের স্ত্রী শিরিন আকতার, কামাল হোসেন, নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী সুরমা আক্তারসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো অনেকেই তাদের মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন বলে তারা জানান।

শুধু তাই নয় স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় স্কুলছাত্রীসহ বাবা বোনকে পিটিয়ে আহত করেছে আব্দুর রহিম ও মনির হোসেন। এই নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে আব্দুর রহিম ও মনির হোসেন নামে দু’জন গ্রেফতার হয়, জেল খাটে। তাদের অশ্লীলতা এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে আব্দুর রহিম ও মনির হোসেনের বাড়ির সামনে দিয়ে ছাত্রীরা স্কুলে যেতে ভয় আঁৎকে থাকে।

এ প্রতিবেদকের কাছেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে চতুর্থ শ্রেণীর দুইছাত্রী অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় মহিলা মেম্বার নাসরিন বেগম নয়ন ও পুরুষ মেম্বার বাহার উদ্দিন বলেন -তারা খুবই খারাপ লোক।

স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটলে নিজেদের গায়ে নিজেরা আঘাত করে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাসিয়ে দিবে। তারা সব ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত। প্রতিবাদ করলে আমাদের দিকেও তেড়ে আসে। মীমাংসার নামে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়।

৭ নং হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন- আমি অতীতের কথা জানলেও সম্প্রতি কি হয়েছে তা সন্ধ্যায় জানতে পারলাম। দু’পক্ষের লোককে ডেকে বিস্তারিত জেনেছি। তবে ইসমাইল ডাক্তারকে মামলায় জড়ানো দুঃখজনক।

সেখানে সে থাকার কথাও না। কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নুরুল আফসার বলেন -দু’পক্ষের লোকজনই মামলা করেছেন।

এক পক্ষের দুই জন জেলহাজতে আছে। তদন্ত চলছে। অপর পক্ষের লোক হাসপাতলে ভর্তি। এম সি রিপোর্ট আসলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তদন্ত স্বার্থে আপাতত এটুকুই।