নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে নির্বাচন বানচালে তৎপর বিএনপি!

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ২ দিন বাকি। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন প্রক্রিয়ার সব সরঞ্জাম ইতোমধ্যেই প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকাগুলোতে পৌঁছতে শুরু করেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা দলগুলোও চূড়ান্তভাবে তাদের নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। উৎসবমুখর পরিবেশে সারাদেশে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করলেও বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে বাধ সেধেছে। নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, নির্বাচন বানচাল করাসহ নানা অপতৎপরতায় উঠেপড়ে লেগেছে দলটি।

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে কথিত ঐক্যফ্রন্টের আশ্রয়ে দশ বছর পর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। রাজনীতির মাঠে ১০ বছরে পরিত্যাক্ত বিএনপি একেবারেই জনবিচ্ছিন্ন। দলে নেতৃত্বহীনতা, সমন্বয়হীনতার অভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে শুরু থেকে প্রস্তুত না থাকলেও তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার নেতিবাচক মনোভাবের মধ্যদিয়েও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে নির্বাচনে আসলেও দলীয় কোন্দল, মনোনয়ন বাণিজ্য, বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রতিরোধের মুখে কোণঠাসা বিএনপি নির্বাচনের ৪ দিন আগেও একেবারেই জনবিচ্ছিন্ন। নির্বাচনে একেবারে সুনিশ্চিত পরাজয় জেনে আশ্রয় নিচ্ছে নানা রকম অপকৌশলের। নির্বাচন বর্জনের কৌশলসরূপ নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে শুরু থেকেই নানা টালবাহানা করলেও প্রতিবারই ব্যর্থ হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্বাচন কমিশন গঠনের পর থেকেই বিএনপি থেকে নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানো শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করে নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়। কে এম নুরুল হুদাকে বিএনপি জামায়াত আমলে বিএনপি বিরোধী জনতার মঞ্চের উল্লেখ করে মিথ্যে তথ্য ছড়ানো হয়।

নির্বাচন কমিশনকে পক্ষপাতদুষ্ট উল্লেখ করে বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করা বিএনপির নির্বাচনী কৌশল বলে উল্লেখ করেন দলের একাধিক নেতা। নির্বাচন কমিশনারকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নানা অভিযোগ নিয়ে ব্যস্ত রাখার কৌশলসরূপ কিছুদিন পর পর কমিশনের দ্বারস্থ হন বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সর্বশেষ নানামুখী অপকৌশলে ব্যর্থ হয়ে গত মঙ্গলবার দলের নেতা-কর্মীদের উপর হামলার নালিশ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যান ঐক্যফ্রন্টের ১০ জন নেতা। জাতীয় নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। আলোচনায় ড. কামাল ছিলেন আক্রমণাত্মক। এক পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবালয়ের সচিব ড. কামালকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্টের নেতারা অভিযোগ জমা না দিয়ে সভা বর্জনের মধ্য দিয়ে ঘটনার ইতি ঘটান।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মনোনয়ন বাণিজ্য, দলীয় অন্তর্কোন্দল, আইএসআই যোগসূত্র, ভোট বাণিজ্যে ধরা পড়া, মতিঝিলে সর্বশেষ বিদেশ হতে কালো টাকাসহ নানা অপতৎপরতা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় নিশ্চিত পরাজয় জেনে নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিতে পারে বিএনপি।