বিএনপির রাজনীতির জন্য কাল কামাল-জাফরুল্লাহ!

ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, নির্বাচনবিমুখতা, দলীয় কোন্দল ও অবিশ্বাসের রাজনীতির কারণে বিগত এক দশক ধরে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না বলে মনে করছেন রাজনীতি সচেতনরা। দলটির অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের জন্য ড. কামাল ও ডা. জাফরুল্লাহকেও দায়ী মনে করছেন খোদ বিএনপিরই শীর্ষ কিছু নেতা।

এই দুই বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা বিএনপির নীতি-নির্ধারকদের প্রভাবিত করে দলকে বিপথে চালিত করারও ষড়যন্ত্র করছেন বলেও গুঞ্জন আছে।

বিএনপির একটি সূত্র বলছে, দলটির রাজনীতিকে সীমিত করে একটি আজ্ঞাবহ দলে পরিণত করার দীর্ঘ চেষ্টা চালাচ্ছে একটি মহল। সে হিসেবে ড. কামাল ও ডা. জাফরুল্লাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে বিএনপির একটি অংশ।

গুঞ্জন উঠেছে, বিএনপিকে আন্দোলনবিমুখ করে নয়াপল্টনে আবদ্ধ রাখতে এই দুই জ্যেষ্ঠ নেতা একটি মহলের হয়ে কাজ করছেন। তাদের কারসাজির কারণে বিএনপির রাজনীতিতে আজ বিভক্তি ও অবিশ্বাস প্রকাশ্য রূপ ধারণ করেছে। ড. কামাল কৌশলে বিএনপিকে আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে দূরে রাখছেন। আর ডা. জাফরুল্লাহ বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তারেক রহমান-বিরোধী বক্তব্য দিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরে তারেকবিরোধী মনোভাব গড়ে তুলে বিএনপিকে জিয়া পরিবারের প্রভাব মুক্ত করার চেষ্টা করছেন।

প্রবীণ এই দুই রাজনীতিবিদের কারণে বিএনপিকে বিভিন্ন ইস্যুতে নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে বলেও মনে করছে বিএনপির একটি অংশ। তাই বিএনপিকে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে ড. কামাল ও ডা. জাফরুল্লাহর কাছ থেকে দূরে থাকাকে জরুরি মনে করছেন বিএনপির ওই অংশটি।

অন্যদিকে বিএনপির গোপন একটি সূত্র বলছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলকে ঠেকানোর নামে কথিত জাতীয় ঐক্য তৈরির ভুয়া স্লোগান দিয়ে একটি নির্বাচনী জোট গঠন করেন ড. কামাল ও জাফরুল্লাহ। কামাল-জাফরুল্লাহর পাতানো ফাঁদে পা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির সিনিয়র কয়েকজন নেতা। ২০ দলীয় জোটের মতামতকে উপেক্ষা করে কামালের কথিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয় বিএনপি, যার কারণে জামায়াত ও ২০ দলের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয় বিএনপির। ফলে একাদশ সংসদ নির্বাচন ও সদ্য সমাপ্ত ঢাকা সিটি নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় ঘটে বিএনপির। বিএনপি ভাঙার এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছিল কামাল-জাফরুল্লাহ, তাতে তারা শতভাগ সফল হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার পরিবারের লোকজন কয়েক দফা বৈঠক করেছেন ড. কামালের সঙ্গে। কামালের পরামর্শেই তারা খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্ত করে বিদেশে পাঠাতে চাচ্ছে বিএনপি বিরোধী একটি মহল। অচিরেই ড. কামাল ও ডা. জাফরুল্লাহর নগ্ন হস্তক্ষেপ বন্ধে বিএনপি নেতাদের সতর্ক হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির বড় একটি অংশ।