ব্রেকিং:
চার বছর পর সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার? আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা লক্ষ্মীপুরে করোনা উপসর্গে প্রবাসীর মৃত্যু! লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে দিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে করোনা রোগী ৩৭ জন : নতুন করে শিশুসহ আক্রান্ত ৩ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের মারা যাওয়া তরুণের করোনা নেগেটিভ, তিন ভাই বোনের পজেটিভ লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিল এডভোকেট নয়ন লক্ষ্মীপুরে ত্রাণের সাথে ঘরও পেল লুজি মানসম্মত কোন ধাপ অতিক্রম করেনি গণস্বাস্থ্যের কিট পরিস্থিতি ঠিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যদের সাথে পুলিশ সুপারের ভিডিও কনফারেন্স লক্ষ্মীপুরে আরো ৩ জনের করোনা পজেটিভ আপনিকি করোনা পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিট ব্যবহারের বিপক্ষে? লক্ষ্মীপুরে ধান কেটে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিল ছাত্রলীগ লক্ষ্মীপুরে ২০০০ পরিবার পেল উপহার সামগ্রী
  • বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

বেলাভূমি আর ইলিশের হাতছানি মতিরহাট মেঘনাতীরে

আলোকিত লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ৯ ডিসেম্বর ২০১৯  

 

উত্তাল মেঘনার মোহনায় ইলিশের টানে অবিরত লড়াই করেন মৎস্যজীবীরা। জীবনের মায়া ত্যাগ করে রোদে জ্বলে, বৃষ্টিতে ভিজে, দুর্যোগের ভয়কে জয় করে শিকার করেন রুপালি ঝিলিক দেওয়া তাজা ইলিশ। সেখানেই নদীর গা ঘেঁষে আদুরে ভঙ্গিতে হেলেদুলে এঁকেবেঁকে দুদিকের দিগন্তে মিলিয়ে গেছে সবুজ ঘাসের কার্পেটে আচ্ছাদিত মেঘনাতীর। বিশাল বেলাভূমি নিয়ে জেগে ওঠা নদীতীরে সুনসান নীরবতা। এ নীরবতায় তীরের বেলাভূমিতে আঁছড়ে পড়ছে ছোট ছোট ঢেউ। ঢেউয়ের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ, দিগন্তছোঁয়া খোলা আকাশ, মুক্ত বাতাস, বিস্তৃত বেলাভূমির বালুময় প্রান্তর,  বিশাল মেঘনার বুকে ঢেউয়ের তালে তালে মাছ ধরা নৌকার নাচন আর নৌকার কলকল ধ্বনি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এমন চমৎকার দর্শনীয় স্থানের নাম মতিরহাট মেঘনাতীর।
লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়নের বিখ্যাত বাজার মতিরহাট মেঘনতীরেই দেখা মিলবে এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য। যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায়, স্থানটি দর্শনার্থীদের কাছে বেশ উপভোগ্য হওয়ায় ছুটির দিন, ঈদ কিংবা বিভিন্ন উৎসবে মানুষেরও উপচেপড়া ভিড় জমে সেখানে। বিগত বছরগুলোর চেয়ে মতিরহাট মেঘনাতীরে দর্শনার্থীদের ভিড় কয়েকগুণ বেড়েছে। বাজারের দুই পাশেই মেঘনার বিশাল চর থাকায় দুই পাশেই চিকচিক করা বালুপথে পা মিলিয়ে হাঁটতে পারেন দর্শনার্থীরা।
যা দেখবেনঃ 
নদীতীরে গেলে তো আপনি নদীর বিশাল জলরাশি দেখতে পাবেনই। পাশাপাশি জেলেদের ইলিশ শিকারের দৃশ্য দেখা যাবে খুব কাছ থেকে। দেখবেন  ইলিশ ঘাট এবং সারি সারি নদীতে ভাসা ইঞ্জিনচালিত মাছ ধরার নৌকা।  নদীতীরের নারকেল-সুপারি বাগান, বিশাল ছাতার মতো ছড়ানো রেইন ট্রি আর অসংখ্য গাছের গ্রামগুলোতে চোখজুড়ানো সবুজে সেজেছে প্রকৃতি। শেষ বিকেলে নিঃসঙ্গ ঘুঘুর ডাক শেষে ক্লান্ত সূর্য যখন বিদায় নিতে ব্যস্ত, তখন অধিক ব্যস্ততায় বাড়ির পথ ধরে রাখাল বালক, গরুর পাল, দুরন্ত শালিকের ঝাঁক আর শ্বেতশুভ্র বলাকার দল। ইট-পাথরে মোড়া শহরের যান্ত্রিকতা আর জীবনের জটিল সমীকরণে মন যখন হাঁপিয়ে উঠবে, তখনই প্রকৃতির এ অপরূপ স্বর্গে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে ছুটে যেতে পারেন আপনিও। আপনার ভ্রমণকে আরো বেশি রোমাঞ্চকর করতে চাইলে ঘুরে আসুন নদীতে জেগে ওঠা চর শামছুদ্দিনে। সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, চরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা খাল আর খড়কুটোর ঘর, চরের সবুজে মোড়ানো দৃশ্য দেখতে পাবেন খুব কাছ থেকে।
অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যে গড়ে ওঠা এ স্থান ইতিমধ্যে নজর কেড়েছে কাছের ও দূরের দর্শনার্থীদের। ভ্রমণপিপাসু বহু দর্শনার্থী  ও ভ্রমণপিপাসু অনেক সংগঠনের পা পড়েছে মতিরহাটের এ মেঘনাতীরে। এখানকার সুন্দর সৈকত যে কারো মনের গভীরে নাড়া দেবে। বিশাল বেলাভূমি নিয়ে এখানে সৈকত জেগে আছে। যে কেউ চাইলে বেলাভূমির পথ ধরে হাঁটতে পারবে বহু দূর। ইচ্ছে করলে নদীতে গোসল করতেও কারো জন্য মানা নেই। এখানে সৈকত ও বেড়িবাঁধ দুটোই রয়েছে। আর নদীর পাড়ে নারকেল-সুপারির বিশাল বাগান তো আছেই।
কোথায় থাকবেনঃ 
মতিরহাটে এখনো থাকার মতো কোনো আবাসিক হোটেল গড়ে ওঠেনি। রাত্রিযাপনের জন্য অবশ্যই জেলা শহরকে বেছে নিতে হবে। জেলা শহরে উন্নত মানের বেশ কিছু গেস্ট হাউজ গড়ে উঠেছে। উন্নত মানের দুটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। বাগবাড়ির ঐতিহ্য কনভেশন ও স্টার গেস্ট হাউজ এবং চকবাজারের সোনার বাংলা আবাসিক রেস্টুরেন্ট ও মুক্তিযোদ্ধা হাউজ অন্যতম। সেক্ষেত্রে খরচ আসবে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা।
কোথায় খাবেনঃ
সকাল বা রাতের খাবারটা গেস্ট হাউজেই সেরে নিতে পারবেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, দিনের বেলায় যেহেতু ভ্রমণে যাবেন, তাই মতিরহাটের মেঘনাতীরে তাজা ইলিশ দিয়ে দুপুরের খাবারও খেয়ে নিতে পারবেন। আর মহিষের খাঁটি দধির স্বাদটাও নিতে ভুলবেন না। চাইলে নদীতীরের ঘাট থেকে ইলিশ আর হোটেল বা দধির দোকান থেকে দধি নিয়ে আসতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, ইলিশ যেমন তাজা, দধিও তেমন খাঁটি।
যেভাবে যাবেন মতিরহাট মেঘনাতীর 
রাজধানী ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সড়কপথে বাসে করে কিংবা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে লঞ্চে করে চাঁদপুর হয়ে জেলার শহরের ঝুমুর স্টেশন, তারপর লক্ষ্মীপুর-রামগতি আঞ্চলিক সড়কের যেকোনো গাড়িতে তোরাবগঞ্জ নেমে সেখান থেকে মতিরহাট সড়ক দিয়ে মেঘনাপাড়ে পৌঁছান। লঞ্চে গেলে খরচ পড়বে আসা-যাওয়া মোট ৮৯০ টাকা আর সড়কপথে বাসে করে গেলে মোট আসা-যাওয়ার খরচ পড়বে ৯৭০ টাকা।
সতর্কতা
সাধারণত নদীতে ভাটা থাকলে আপনি নদীতীরের বিশাল চর দেখতে পাবেন। কিন্তু জোয়ারের সময় চর একেবারেই ডুবে থাকবে। আপনি যদিও ভাটার সময় পা রাখেন, তবে আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে নদীর পানি বাড়ে কি না। যদি পানি বেড়ে যায়, তাহলে ডোবার আশঙ্কাও থাকছে। নদীতীর দিয়ে চলার সময় পা যেন পিছলে না পড়ে সেদিকেও খেয়াল রাখা দরকার। অনেক সময় নদীতে জোয়ারের ভাটা হয়। তখন তীর অনেকটা পিচ্ছিল থাকে। আর মেঘনাতীর কোনো অবস্থাতেই যেন আপনার দ্বারা অপরিষ্কার না হয়। যেমন—চিপস, চানাচুরের প্যাকেট মেঘনাতীরে ফেলে আসা যাবে না। এতে নদী ও মেঘনাতীরের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশাল নদী, খোলা আকাশ আর সবুজ প্রকৃতির সান্নিধ্যে বিষণ্ণতা আর একঘেঁয়েমি মনোভাব কাটিয়ে মনকে ভরিয়ে তুলুন প্রাণপ্রাচুর্য আর উচ্ছ্লতায়। ফেরার সময় বোনাস হিসেবে সঙ্গে নিয়ে যাবেন রুপালি ঝিলিক দেওয়া তাজা ইলিশ কিংবা মহিষের খাঁটি দই।

আলোকিত লক্ষ্মীপুর
আলোকিত লক্ষ্মীপুর
//