রামগঞ্জে প্রাইমারী স্কুলের কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় ১৬১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভূয়া ভাউচারের মাধ্য শিক্ষা উন্নয়নের ১কোটি ৭৯ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা লুটপাট করে আত্বসাতের অভিযোগ উঠেছে। সরকারী নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী তৌহির উদ্দিন তাদের পছন্দমত ২/৪জন প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে ওই বরাদ্ধের টাকা লুপাটোর মিশন সম্পন্ন করেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ইং সনের সরকারের রাজস্ব তহবিল ও পিইডি-৪ এর আওতায় ৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৬১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য পৃথকভাবে
১কোটি ৭৯ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় । ১৬১টি বিদ্যালয়ে স্লিপ প্রকল্পে ৯০ লক্ষ ৫ হাজার টাকা, এছাড়াও ২৩টি স্কুলে ২লক্ষ টাকা করে ৪৬ লক্ষ টাকা, ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ৫ স্কুলের জন্য ৭লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, রুটিন ম্যান্টেইনেন্স সকল স্কুলের জন্য ৪০ হাজার টাকা করে ৬৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, ওয়াশব্লকের নামে ২০টি স্কুলের জন্য ৩লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, প্রাক প্রাথমিকের ১০ হাজার টাকা করে ১৬১ স্কুলের জন্য ১৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে মোট ৫টি প্রকল্পের জন্য সর্বমোট ১কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা ৪৫ হাজার টাকার বরাদ্ধ দেওয়া হয়। কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানান, উপজলা শিক্ষা অফিসার মোঃ দৌলতর রহমান ও উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী স্কুল ভিজিট করে বরাদ্ধকৃত কাজের তদারকির নামে ১৬১ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের
কাছ থেকে লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এবং বিগত ১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্ধের ওই অর্থ ৩০জুনের আগে কাজ শেষ করে স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের একাউন্টে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও শিক্ষা অফিসার তা না করে সকল টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিজ একাউন্টে নিজের দায়িত্বে রেখে দেয়। পরে নিজের ইচ্ছা মাফিক বরাদ্ধ অনুযায়ী ২৩টি স্কুলের হেডমাষ্টারদের কাছ থেকে ১০হাজার টাকা ও
উপজেলা সহকারী ইঞ্জিনিয়ার তৌহির উদ্দিন ১০ হাজার টাকা, এভাবে ক্ষুদ্র মেরামত, স্লিপ,রুটিন ম্যান্টেইনেন্স, প্রাকপ্রাথমিক, ওয়াসব্লকসহ প্রত্যেকটি প্রকল্পে সকল স্কুল প্রধানদের কাছ থেকে
ভূয়া বিল ভাউচার দুর্বলতার সুযোগে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজের পকেট ভারি করেছেন । এদিকে বিভিন্ন হয়রানী ও চাকুরী হারানোর ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রধান শিক্ষক
জানান, শিক্ষা কর্মকর্তা দৌলতের রহমান বিগত এক বছর যাবত যোগদানের পর থেকে স্কুল ভিজিট ফি থেকে শুরু করে শিক্ষক বদলি বানিজ্য, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিতরন বানিজ্যসহ নানান অনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত। মোট কথা টাকা ছাড়া কোন কথাই বলতে রাজি নন তিনি। উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী তৌহির উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে আমি কোন কথা বলবো না। যাহা বলার শিক্ষা অফিসার বলবে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ দৌলতের রহমান জানান, বরাদ্ধকৃত টাকা যাতে ফেরত না যায় সেজন্য জুন মাসে টাকা উত্তোলন করে নিজ ব্যাংক একাউন্টে জমা রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়গুলোর শতভাগ কাজ সম্পন্ন করার পরেই বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। সরকারি টাকা লুটপাটের কোনো সুযোগ নেই। আমার বিরুদ্ধে টাকা আত্বসাতের অভিযোগ সঠিক নয়। তবে প্রকৌশলীর সাথে শিক্ষকদের কিছু হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান জানান, আমি রামগঞ্জে সবেমাত্র যোগদান করেছি। তবে এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। এর পরেও বিষয়টি আমি খতিয়ে
দেখছি। সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।