লক্ষ্মীপুরে বসতঘর জবর দখলের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ভাগ্নে কর্তৃক সন্ত্রাসী কায়দায় দরজার তালা ভেঙ্গে মামার বসত ঘর জবরদখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় বসতঘরে থাকা প্রায় ৫ লাখ টাকার আসবাবপত্র ও অন্যান্য মূল্যবান মালামাল লুট হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। আর এসব কাজে প্রত্যক্ষ ভাবে মদদ ও সহযোগীতা করছেন স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। এসব ঘটনায় হুমকি ও লাঞ্চিত হওয়ার ভয়ে কোন প্রতিবাদ করতে পারছেনা ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার ৩নং চরমোহনা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কালা গাজি পাটওয়ারী বাড়ির ফজলুর রহমান পৈত্রিক সম্পত্তির উপর ১তলা পাকা ভবন নির্মাণ করেন। কিন্তু ব্যবসার কারণে বিপুল পরিমান দামি আসবাবপত্র সংবলিত এ বাড়িটি তালাবদ্ধ করে ঢাকায় থাকেন তিনি। সম্প্রতি ৩ মাসের জন্য ফজলুর রহমান দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। এ সুযোগে ভাগ্নে আনোয়ার হোসেন, ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস সুচি স্থানীয় সরোয়ার হোসেন পিটু সহ প্রভাবশালীদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ওই বাড়িটির তালা ভেঙ্গে জবরদখল করে বসবাস শুরু করে। এসময় ওই ঘরে থাকা মূল্যবান আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালামাল লুট করা হয় এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীর। এছাড়া পরবর্তিতে ওই বাড়িতে বিভিন্ন ফল ও নারিকেল সুপারী জোরপূর্বক নিয়ে যায় তারা। এনিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ (শনিবার) প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে গণমাধ্যমকর্মীদের  নিকট এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ফজলুর রহমান।
অভিযোগে ফজলুর রহমান আরো বলেন, গত ৫ বছর পূর্বে নির্মিত এই ভবনটিতে বর্তমানে তার আপন প্রবাসী ভাগ্নে ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী সূচি আক্তার জোরপূর্বক দখল করে বসবাস করতেছে। তাদের ভয়ে নিজের পৈত্রিক বাড়িতে যেতে পারছেনা। বাড়িতে গেলে মারধর ও লাঞ্চিত করা হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন স্থানীয় সরোয়ার হোসেন পিটু। আর এসব ঘটনায় সরাসরি মদদ দিচ্ছেন ওয়ার্ড মেম্বার সুমন, উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্য মামুন বিন জাকারিয়াসহ আরো অনেকে। তাদের ভয়ে তিনি কোন প্রতিবাদ করতে পারছেনা বলেও জানান।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে ওই বাড়িতে গেলে দেখা যায় অভিযুক্ত জান্নাতুল ফেরদৌস সূচি আক্তার দখলকৃত ঘরেই বসবাস করছেন। এসময় ঘরে বসবাস, মালিকানা ও জবরদখলের কথা জানতে চাইলে ঘর দখলের কথা স্বীকার করে তিনি জানান, তার মামা শ^শুর ফজলুর রহমানের সাথে আর্থিক লেনদেন এর বিরোধ আছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করলে থানার দারোগা, স্থানীয় পিটু, মামুন বিন জাকারিয়া ঘর দখল করতে সিদ্ধান্ত দেন। পরে স্থানীয় ১০/১২জনের সহযোগিতায় এই ঘরটি দখল করেছেন তারা। তবে মালামাল লুটের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। এসময় আর্থিক লেনদেনের কাগজপত্রের কথা ও থানার দারোগার নাম এবং থানার কোন কাগজ আছে কিনা তা দেখতে চাইলে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
হুমকি ও জবরদখলে জড়িত থাকার অভিযুক্ত সরোয়ার হোসেন পিটু বলেন, ফজলুর রহমান এর নিকট টাকা পাওনা আছেন তার ভাগ্নে ফারুক হোসেন। টাকা না দেওয়ায় তার ঘরটি স্থানীয় উপজেলা যুবলীগ নেতা মামুন বিন জাকারিয়া বলেছে ঘর দখলে নিতে। তাই ১০/১২জন দলীয় ছোটভাইদের সাথে করে দখল করে নিয়েছি। হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ফজলুর রহমান এখন পলাতক আছেন। তার এলাকায় আসার সাহস নেই। এসময় তিনি প্রভাবশালীদের প্রভাব দেখাতে গিয়ে সাংবাদিকদের নিউজে কিছু হবেনা বলেও দম্বোক্তি করেন।

ঘর জবর দখলে সহযোগিতা ও মদদ দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে যুবলীগ নেতা ও লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের সদস্য মামুন বিন জাকারিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা আমাকে জানিয়েছেন। তবে দখলের সাথে জড়িত থাকার বিষয় তিনি অস্বীকার করেন।  

নিজ বাড়িতে নির্মিত ঘরটি দখলচ্যুত ও সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামণা করছেন ভূক্তভোগী ফজলুর রহমান।