মুহূর্তের মধ্যে এতিম হয়ে গেল তিন ভাই-বোন

বাবা মারা গেছে ক'বছর আগে। মাকে নিয়েই একসাথে থাকতো তিন ভাই-বোন। সন্তানদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ছিলো মা। এটাও মনে হয় যমদূতের সইলো না। অটোরূপে যমদূত এসে কেড়ে নিলো মা মাজেদা বেগমের প্রাণ। ঘাতক অটোবাইকের আঘাতে প্রাণপ্রদীপ নিভে গেলো তিন সন্তানের জননী মাজেদা বেগমের। দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ঘাতক চালক তাৎক্ষণিক পালিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পরে তাকে পুলিশের হাতে ধরা পড়তে হলো। সড়ক দুর্ঘটনায় নির্মম এ মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে গতকাল রোববার সকালে চাঁদপুর শহরের নিশি রোড এলাকায়।

মরহুম তকবীর হোসেনের স্ত্রী মাজেদা বেগম তার তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন নিশি বিল্ডিং রোড এলাকায়। অনেকটা গরিব ও অসহায় অবস্থায় তারা এখানে বসবাস করছেন। দুই ছেলে মাসুদ (২৫) ও মহসিন (২১) দিনমজুর। তাদের রোজগারেই চারজনের সংসার চলে। মেয়ে সানজিদা (১৬) লেডী প্রতিমা স্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়ে। স্বামী কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সকাল সাড়ে দশটার দিকে মাজেদা বেগম বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তা পার হতে নিলে এমন সময় দ্রুতগতির একটি অটোবাইক এসে মাজেদা বেগমকে সজোরে আঘাত করে পালিয়ে যায়। সাথে সাথে মাজেদা বেগম মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার মাথায় আঘাত লেগে মাথা ফেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এ অবস্থায় মাজেদা বেগমকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্মরত চিকিৎসক মাজেদা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।

মায়ের এমন করুণ মৃত্যুতে তিন ভাই-বোন যেনো পাগলপ্রায়। তাদের আর্তনাদে উপস্থিত অনেকে কেঁদেছে। পুরো পরিবেশ তখন শোকাচ্ছন্ন হয়ে উঠে। এলাকাবাসী তাদেরকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা যেনো হারিয়ে ফেলে।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যার সময় ঘাতক অটোবাইক চালক জসিম উদ্দিনকে (৫০) মডেল থানার পুলিশ শহরের স্টেডিয়াম এলাকা থেকে আটক করে। অপরদিকে নিহত মাজেদা বেগমকে ময়না তদন্ত ও জানাজা শেষে রেলওয়ে কবরস্থানে দাফন করা হয়।