ব্রেকিং:
চার বছর পর সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার? আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা লক্ষ্মীপুরে করোনা উপসর্গে প্রবাসীর মৃত্যু! লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে দিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে করোনা রোগী ৩৭ জন : নতুন করে শিশুসহ আক্রান্ত ৩ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের মারা যাওয়া তরুণের করোনা নেগেটিভ, তিন ভাই বোনের পজেটিভ লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিল এডভোকেট নয়ন লক্ষ্মীপুরে ত্রাণের সাথে ঘরও পেল লুজি মানসম্মত কোন ধাপ অতিক্রম করেনি গণস্বাস্থ্যের কিট পরিস্থিতি ঠিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যদের সাথে পুলিশ সুপারের ভিডিও কনফারেন্স লক্ষ্মীপুরে আরো ৩ জনের করোনা পজেটিভ আপনিকি করোনা পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিট ব্যবহারের বিপক্ষে? লক্ষ্মীপুরে ধান কেটে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিল ছাত্রলীগ লক্ষ্মীপুরে ২০০০ পরিবার পেল উপহার সামগ্রী
  • শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

অপরাধীরা ছাড়া পেলে বিচার বিভাগ আস্থাহীনতায় পড়বে

আলোকিত লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০১৮  

নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর সোমবার বিকালে সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে দুই মামলায় মোট ১৫৬৪ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করা হয়।

এতে কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক র‌্যাব কর্মকর্তা আরিফ হোসেন, মাসুদ রানাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। বাকি ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন করা হয়েছে। রায় ঘোষণার ১৫ মাস পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হল। গত বছরের ২২ আগস্ট বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের করা আপিল শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, র‌্যাব একটি এলিট ফোর্স। মানুষের জানমাল রক্ষার জন্য এই ফোর্স বহুবিধ কাজ করছে। কতিপয় ব্যক্তির জন্য সামগ্রিকভাবে এই বাহিনীকে দায়ী করা যায় না। তাদের ভাবমূর্তি নষ্টেরও কারণ নেই। কতিপর অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আসামিরা যে ধরনের অপরাধ করেছে, যদি তারা ছাড়া পেয়ে যায়, তাহলে বিচার বিভাগের প্রতি জনগণ আস্থাহীনতায় ভুগবে।

এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি আমরা পেয়েছি। যাবজ্জীবনপ্রাপ্তদের বিষয়ে আপিল করব কি না, রায়টি পুরোপুরি পড়ে সিদ্ধান্ত নেব। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান, ‘পূর্ণাঙ্গ রায়ের সত্যায়িত কপি যাবে সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে। রায় প্রকাশের এক মাসের মধ্যে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আপিল করার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে আপিল না করলে রায় কার্যকরের জন্য বিচারিক আদালত সত্যায়িত অনুলিপি কারাগারে পাঠাবে। কারা কর্তৃপক্ষ জেলকোড অনুযায়ী রায় কার্যকর করবেন।’

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার প্রায় সাড়ে চার বছর পার হয়েছে। তিন বছরে ওই ঘটনার বিচারের দুটি ধাপ অতিক্রম হয়েছে। এখন বাকি আছে শুধু আপিল বিভাগের চূড়ান্ত বিচার। গত বছরের ২২ আগস্ট সাত খুন মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃদ হন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি লাশ। পরদিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত অন্যরা হলেন- নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম। ঘটনার এক দিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় ১১ মে একই থানায় আরেকটি মামলা হয়। ওই মামলার বাদী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। পরে দুটি মামলা একসঙ্গে তদন্ত করে পুলিশ।

২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ এ মামলায় ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। দণ্ডিতদের ২৫ জনই সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনী থেকে প্রেষণে র‌্যাব-১১তে কর্মরত ছিলেন। মামলার পর তাদের নিজ নিজ বাহিনী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে যারা কারাগারে আছেন, তারা হাইকোর্টে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। এছাড়া নিু আদালতের মৃত্যুদণ্ডের রায় অনুমোদনের জন্য নথিও ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। এরপর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুতের জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশ দেন।

এরপর প্রধান বিচারপতি এ মামলার শুনানির জন্য ওই বছরের (২০১৭ সাল) ১৭ মে বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিলে তা কার্যতালিকায় আসে। ২২ মে থেকে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের করা আপিল শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে ওই বছরের ২২ আগস্ট রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

রায়ে বিচারিক আদালতের দেয়া ২৬ জনের মধ্যে র‌্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেনসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। বাকি ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া নিু আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে দেয়া ৯ জনের সাজা বহাল রাখা হয়।

মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি : ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সাবেক র‌্যাব কর্মকর্তা আরিফ হোসেন, লে. কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম মাসুদ রানা, হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, এবি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হিরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব আলী, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দু বালা, সৈনিক আবদুল আলিম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম।

মামলায় যাবজ্জীবন পাওয়া আসামি : সৈনিক আসাদুজ্জামান নুর, সার্জেন্ট এনামুল কবির, নূর হোসেনের সহযোগী আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান, রহম আলী, আবুল বাশার, মোর্তুজা জামান, সেলিম, সানাউল্লাহ, শাহজাহান ও জামালউদ্দিন। এই খুনের ঘটনায় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা ও একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যদের সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় শুরু থেকেই মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে জনমনে সংশয় ও সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। রায়ে সেই সংশয় দূর হয়েছে। একই সঙ্গে সাতজনকে খুন করে লাশ যে কায়দায় নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছিল, সে খবরে দেশবাসী যেমন শিউরে উঠেছিল, তেমনি এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে র‌্যাবের একটি ইউনিটের সদস্যের যুক্ততার অভিযোগ সবাইকে হতবাক করেছে। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে নাম আসে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেনের। সবকিছু মিলিয়ে খুনের ঘটনাটি একটি চরম সংবেদনশীল ও আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়।

আলোকিত লক্ষ্মীপুর
আলোকিত লক্ষ্মীপুর
//