ব্রেকিং:
চার বছর পর সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার? আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা লক্ষ্মীপুরে করোনা উপসর্গে প্রবাসীর মৃত্যু! লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে দিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে করোনা রোগী ৩৭ জন : নতুন করে শিশুসহ আক্রান্ত ৩ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের মারা যাওয়া তরুণের করোনা নেগেটিভ, তিন ভাই বোনের পজেটিভ লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিল এডভোকেট নয়ন লক্ষ্মীপুরে ত্রাণের সাথে ঘরও পেল লুজি মানসম্মত কোন ধাপ অতিক্রম করেনি গণস্বাস্থ্যের কিট পরিস্থিতি ঠিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যদের সাথে পুলিশ সুপারের ভিডিও কনফারেন্স লক্ষ্মীপুরে আরো ৩ জনের করোনা পজেটিভ আপনিকি করোনা পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিট ব্যবহারের বিপক্ষে? লক্ষ্মীপুরে ধান কেটে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিল ছাত্রলীগ লক্ষ্মীপুরে ২০০০ পরিবার পেল উপহার সামগ্রী
  • সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

স্বপ্ন দেখাচ্ছে ৯ মেগা প্রকল্প

আলোকিত লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০১৯  

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারের হাতে নেয়া ৯ মেগা প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এই মেগা প্রকল্পগুলো স্বপ্ন দেখাচ্ছে মানুষকে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বদলে যাবে দেশের চেহারা, এমনটি ধারনা করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

পদ্মা বহুমুখী সেতু: ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু সম্পন্ন হলে জাতীয় অর্থনীতিতে শতকরা ১ দশমিক ২ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। এছাড়া প্রতি বছর শতকরা ০ দশমিক ৮৪ হারে দারিদ্র্য কমবে। গত জানুয়ারি পর্যন্ত পুরো সেতুর কাজ এগিয়েছে ৬৩ শতাংশ। এর মধ্যে মূল সেতুর ৭৩ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নদী শাসনের কাজ শেষ হয়েছে ৫০ শতাংশ। আর মূল সেতু ও নদী শাসনের জন্য পরামর্শক কাজ শেষ হয়েছে ৭৭ শতাংশ। 

এদিকে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এই সেতু দিয়ে যান চলাচল করার বিষয়ে সরকার আশাবাদী। এরই মধ্যে ৯টি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে সেতুর ১৩৫০ মিটার (১ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার) দৃশ্যমান হয়েছে। মোট ৩৩টি স্প্যানের ওপর গড়ে উঠবে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু। 

পদ্মা রেলসেতু: পদ্মা সেতু চালুর দিন থেকেই এর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের জন্য দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে সেতুর রেলসংযোগ প্রকল্পের কাজ। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে রেলসংযোগের কাজ। ২০১৬ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদনের পর দুই বছর লেগেছে প্রকল্পের অর্থায়ন নিশ্চিত করতে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেলপথের নির্মাণকাজ গত অক্টোবরে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রেলওয়ের তথ্য মতে, ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৪ সালের জুনে। গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পে অগ্রগতি ১৬ দশমিক ২ শতাংশ। বর্তমানে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

মেট্রোরেল: দুই ধাপে চলছে উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ। ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন ৬-এর আওতায় ২০২৪ সালের মধ্যে এই কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় উত্তরা-আগারগাঁও অংশটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে, আগারগাঁও-মতিঝিল অংশটি ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের সংশোধিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল প্রকল্পের অগ্রগতি ২১ দশমিক ৫ শতাংশ।

চলতি বছরের ডিসেম্বরে দুই ধাপে চলা এ প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ শেষ হবে। প্রকল্প কার্যালয়ের তথ্য বলছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উত্তরা-আগারগাঁও অংশের ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

এদিকে সব মিলিয়ে রাজধানীর প্রায় ২২ কিলোমিটার সড়কে এখন প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান। কাজ  শেষ হলে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে বিদ্যুৎচালিত এই ট্রেনে। চলতি বছরের শেষেই দেখা যাবে রাজধানীতে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতি সম্পন্ন সবচেয়ে দ্রুতগতির ট্রেন চলাচল।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র: গত বছরের ৩০ নভেম্বর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের চুল্লির জন্য কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন প্রথম ইউনিট ২০২২ সালে এবং একই ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ সালে চালু হবে। এরই মধ্যে প্রকল্পের ২৭ ভাগ কাজের অগ্রগতি হয়েছে।

রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র: ভারতের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন রামপাল থার্মাল বিদ্যুৎ প্রকল্প কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে কাজ করবে। ২০০ কোটি ডলার অর্থায়নে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ ও ভারত। 

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করতে ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড (ভেল) এবং বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিলি) এর মধ্যে চুক্তিটি সম্পাদিত হয়। ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার এই কেন্দ্র নির্মাণে প্রয়োজনীয় ১ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করবে ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। 

চট্টগ্রাম থেকে ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণ: ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার এবং রামু-ঘুমধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। 

দোহাজারি-রামু-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুত গতিতে। চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার রেললাইনের নির্মাণ কাজের প্রায় ২১ দশমিক ৫১ শতাংশ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। সামগ্রিকভাবে দৃশ্যমান হয়েছে দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেললাইনের নির্মাণ কাজ। আগামী ২০২২ সালের মধ্যেই এ প্রকল্পটি চালু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পায়রা সমুদ্রবন্দর: ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর ১৬ একর জমির ওপর এই বন্দর স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নে রামনাবাদ নদীর পশ্চিম তীরে নির্মিত বন্দরটি ২০৩০ সালের মধ্যে পূর্ণাঙ্গভাবে নির্মাণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনটি পর্বে এ কাজ সম্পন্ন হবে। এজন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১০০ থেকে দেড় হাজার কোটি মার্কিন ডলার। 

সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর: ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসেই কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ঘোষণা দেয়। তবে প্রকল্পটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। 

কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় বন্দরটি নির্মাণের জন্য জাপানের পেসিফিক কনসালটেন্ট ইন্টারন্যাশনালের (পিসিআই) মাধ্যমে একটি টেকনো-ইকোনমিক স্ট্যাডি করা হয়েছে। প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) নির্মাণের জন্য নির্ধারিত থাকলেও আগ্রহী বিনিয়োগকারী না পাওয়ায় গভর্মেন্ট টু গর্ভমেন্ট (জিটুজি) ভিত্তিতে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

অর্থায়নের বিষয়টি চূড়ান্ত হলেই গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ২০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মাতারবাড়ী আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল পাওয়ার: কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে নির্মিত হচ্ছে ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। 

মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সরকারের অগ্রাধিকারভুক্ত (ফাস্ট ট্র্যাক) ১০ মেগা প্রকল্পের একটি। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) এর অধীনে নির্মাণ করা হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

মাতারবাড়ী ও ঢালঘাটা ইউনিয়নের এক হাজার ৪১৪ একর জমিতে কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে। 

এ প্রকল্পে ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি স্টিম টারবাইন, সার্কুলেটিং কুলিং ওয়াটার স্টেশন স্থাপন, ২৭৫ মিটার উচ্চতার চিমনি ও পানি শোধন ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। আধুনিক প্রযুক্তির এই কেন্দ্রে কম পরিমাণ কয়লার প্রয়োজন হবে এবং কম কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হবে। 

২০১৫ সালের আগস্টে মাতারবাড়ীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৩৬ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। এই প্রকল্পে ২৯ হাজার কোটি টাকা দেবে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা)। বাকি পাঁচ হাজার কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে। অবশিষ্ট অর্থের যোগান দেবে কেন্দ্রটির বাস্তবায়নকারী ও স্বত্বাধিকারী সিপিজিসিবিএল। প্রকল্পের প্রায় ১৭ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। 

আলোকিত লক্ষ্মীপুর
আলোকিত লক্ষ্মীপুর
//