ট্রাম্পের লক্ষ্যবস্তু ইরানের যেসব ঐতিহাসিক স্থাপনা!

ইরানের রয়েছে সুপ্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। শুধুমাত্র ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাতেই আছে ইরানের বিশটি সাংস্কৃতিক স্থানের নাম। আর এসব স্থানগুলোই বর্তমানে ঝুঁকিতে রয়েছে!

ইরানের শীর্ষস্থানীয় জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার পর চরম সামরিক উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেশটির সাংস্কৃতিক স্থাপনাও তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বলে হুমকি দিয়েছেন। দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সাংস্কৃতিক স্থাপনা সম্পর্কে জেনে নিন-

 

ইমাম মসজিদ

১. ইসফাহান নগরীর কেন্দ্রে ‘নকশ-ই-জাহান’ চত্ত্বর হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বিশাল নগর চত্ত্বরের একটি। এটি ইমাম চত্ত্বর নামেও পরিচিত। এটি তৈরি করা হয়েছিল সপ্তদশ শতাব্দীতে। ‘নকশ-ই-জাহান’ চত্ত্বরে ইমাম মসজিদ। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পর এর নতুন নাম রাখা হয় ইমাম মসজিদ। চমৎকার কারুকার্য খচিত ফলক দিয়ে সাজানো মসজিদটি। এই মসজিদটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।

 

গুলেস্তান প্রাসাদ

২. তেহরানের গুলেস্তান হচ্ছে একটি রাজকীয় প্রাসাদ। উনিশ শতকের কাজার রাজপরিবারের সরকারি বাসভবন ছিল এটি। পুরো প্রাসাদটির বাইরের এবং ভেতরের দেয়ালগুলো সুন্দর কারুকাজ করা।

 

‘দারিউস দ্য গ্রেটের’ প্রতিকৃতি

৩. বেহিস্তানের একটি প্রস্তরখণ্ডে খোদাই করা আর্কিমেনিদ সাম্রাজ্যের ‘দারিউস দ্য গ্রেটের’ প্রতিকৃতি। খ্রীস্টপূর্ব ৫০০ সালের। এর দেয়ালজুড়ে রয়েছে খোদাই করা লিপি। এগুলো বেশ কয়েকটি ভাষায় লেখা রয়েছে।

 

পার্সিপোলিস নগরী

৪.  খ্রীস্টপূর্ব ৫১৫ সালে স্থাপিত হয় পার্সিপোলিস নগরী। এটি ছিল প্রাচীন আকিমেনিদ সাম্রাজ্যের রাজধানী। ১৯৭৯ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বলে ঘোষণা করে। ইরানের ঐতিহাসিক এক ঐতিহ্য হিসেবে মাথা উঁচিয়ে দাড়িয়ে আছে এই নগরী।

 

আরগ-ই-বাম দূর্গ

৫. আরগ-ই-বাম দূর্গ। পশ্চিমের সঙ্গে প্রাচ্যের যে প্রাচীন বাণিজ্য পথ, সিল্ক রোড বলা হয় যাকে, সেই পথের ওপর ছিল এই বাম দুর্গ। এটি ছিল প্রাচীন যুগে মাটি দিয়ে তৈরি করা সবচেয়ে বড় দূর্গ। ২০০৩ সালে ইরানে যে ভূমিকম্প হয়, তাতে এটির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল।

 

আজাদী টাওয়ার

৬. তেহরানের কেন্দ্রস্থলে আজাদী টাওয়ার প্রথমে তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভী। ইরান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার আড়াই হাজার বছর পূর্তি উপলক্ষে এটি তৈরি করা হয়। তবে ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর এটির নাম বদলে আজাদী স্কোয়ার রাখা হয়। এই বিপ্লবের মুখে শাহের পতন ঘটে। ইরানে যেকোনো জাতীয় অনুষ্ঠান-উৎসব উদযাপনের কেন্দ্র এখন আজাদী স্কোয়ার।

এই স্মৃতিসৌধেই কবর দেয়া হয়েছে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতোল্লাহ খোমেনিকে। তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং গুরুত্বপূর্ণ অনেক রাজনীতিকের কবরও এখানে। আধুনিক ইরানের অন্যতম তীর্থস্থান এটি।