ব্রেকিং:
চার বছর পর সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার? আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা লক্ষ্মীপুরে করোনা উপসর্গে প্রবাসীর মৃত্যু! লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে দিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে করোনা রোগী ৩৭ জন : নতুন করে শিশুসহ আক্রান্ত ৩ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের মারা যাওয়া তরুণের করোনা নেগেটিভ, তিন ভাই বোনের পজেটিভ লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিল এডভোকেট নয়ন লক্ষ্মীপুরে ত্রাণের সাথে ঘরও পেল লুজি মানসম্মত কোন ধাপ অতিক্রম করেনি গণস্বাস্থ্যের কিট পরিস্থিতি ঠিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যদের সাথে পুলিশ সুপারের ভিডিও কনফারেন্স লক্ষ্মীপুরে আরো ৩ জনের করোনা পজেটিভ আপনিকি করোনা পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিট ব্যবহারের বিপক্ষে? লক্ষ্মীপুরে ধান কেটে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিল ছাত্রলীগ লক্ষ্মীপুরে ২০০০ পরিবার পেল উপহার সামগ্রী
  • বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

এক মহামারি পর ঘটেছিল নারীর ‘স্বর্ণ যুগ’!

আলোকিত লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ৪ এপ্রিল ২০২০  

কালো মৃত্যুর কারণে লন্ডনের জনসংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। এর প্রকোপ কমে যাওয়ার প্রায় ১৫ বছর পর লন্ডনের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে বড় একটি পরিবর্তন আসে। নারীদের হাতে চলে যায় অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ।

লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং মধ্যযুগ বিষয়ক ইতিহাসবিদ ক্যারোলিন ব্যারন তার গবেষণায় তুলে ধরেছেন সে সময়ের চিত্র। ব্ল্যাক ডেথ পরবর্তীকাল আসলেই কি ইংরেজ নারীদের জন্য স্বর্ণ যুগ ছিল?

১৩৪৯ সালের এপ্রিল মাসে ভয়াবহ মহামারি ব্ল্যাক ডেথ বা কালো মৃত্যু পুরো লন্ডন নগরীতে ছড়িয়ে পড়েছিল। ম্যাথিল্ডা ডি মাইমসের স্বামী জন মৃত্যুবরণ করার পর তার উপর তাদের কন্যা ইসাবেলার অভিভাবকত্বসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পিত হয়। লন্ডনে তখনো প্লেগের ভয়াবহ প্রকোপ অব্যাহত ছিল। তবে ম্যাথিল্ডা বুদ্ধিমতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেন। জন এবং ম্যাথিল্ডা প্রথার মধ্যে থেকেও একটি ভিন্ন ধর্মী পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। 

সে সময় ব্ল্যাক ডেথের প্রভাবে হাজারো পরিবার সর্বশান্ত হয়েছিল। তবে এর মধ্য থেকেই একটি নতুন পথের সূচনা হয়েছিল তা হলো অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর বিশেষ ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া। রাজ্যে দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত পুরুষের অভাবেই নারীর অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। ম্যাথিল্ডা এই যুগের প্রথম অধিকার ভোগীদের একজন। তিনি পর্যাপ্ত সম্পদের মালিক ছিলেন এবং তার উইল লেখারও অধিকার ছিল। 

 

বুনন শিল্পে নারীরা

বুনন শিল্পে নারীরা

মধ্যযুগের ওই সময়টাকে ইতিহাসবিদরা ‘স্বর্ণ যুগ’ বলে অভিহিত করেছেন। লন্ডনে প্লেগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগে পুরো ইংল্যান্ড জুড়ে নারীদের স্বাধীনতা ছিল না বললেই চলে। তবে প্লেগের প্রকোপ কমার পর নারীরা স্বাধীনভাবে জীবন-যাপন করা শুরু করে। 

মহামারির প্রকোপে লন্ডনের জনসংখ্যা ৮০ হাজার থেকে কমে ৪০ হাজারে চলে আসে। সে সময় বেঁচে থাকতে সংসারের হাল ধরতে হয় নারীদেরকেই। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তারা যুক্ত হতে থাকে। তখন নারী অর্থনৈতিক অধিকার চর্চা এবং এ খাতে সক্রিয় হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়। 

১৩৭৩ সালে মৃত্যুবরণ করা রবার্ট ডি রামসে নামক একজন মৎস্য ব্যবসায়ী তার মেয়ে এলিজাবেথের নামে ২০টি শিলিং উইল করেছিল। ১৪৬৫ সাল নাগাদ মেয়েদের অধিকারের ক্ষেত্র আরো প্রসারিত হয়। বিধবা নারীরা তাদের মৃত স্বামীরর বাণিজ্য, ছোটশিল্প, ওয়ার্কশপ, ট্রেডিং এ্ন্টারপ্রাইজ প্রভৃতি পরিচালনা করতে শুরু করে। 

ব্ল্যাক ডেথ পরবর্তী সময় বাবারা মেয়ে সন্তানের নামে সম্পদ উইল করতে থাকে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যেরও উত্তরাধিকার করার রীতিও শুরু হয়। যাইহোক, মধ্যযুগের এই সময়টিতে নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়তে থাকে। তারা অর্থনৈতিকভাবে যে ক্ষেত্রগুলোতে ক্রমাগত সক্রিয় হচ্ছিল নিম্নে তার কয়েকটি উল্লেখ করা হলো-

 

মধ্যযুগে ব্যবসা বাণিজ্যে প্রসার ঘটায় নারীরা

মধ্যযুগে ব্যবসা বাণিজ্যে প্রসার ঘটায় নারীরা

ওই সময় নারীরা একক ব্যবসা করার স্বাধীনতা পায়। এমনকি বিবাহিত নারীরাও তাদের স্বামীর ব্যবসা থেকে স্বতন্ত্র ব্যবসা শুরু করতে পারতেন। নিজেদের স্বতন্ত্র মর্যাদা এবং পরিচিতির ক্ষেত্রেও নারীরা সচেতন হয়ে ওঠে। ১৪৭৫ সালের আগস্ট মাসে অ্যাজনস গাওয়ার নামের এক নারী তার স্বামীকে বাদ দিয়ে নগরীর রীতি মেনে নিজের নামে স্বতন্ত্র পরিচিতির জন্য আবেদন করেন এবং তা অনুমোদিত হয়। 

এসময় নারীরা বৃহৎ পরিসরে ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে। ১৫ শতকে তারা একক বাণিজ্যর পাশাপাশি যৌথ ব্যবসা এমনকি অন্যান্য কর্মকাণ্ডেও যুক্ত হতে থাকে। ধীরে ধীরে তারা বুনন শিল্পে বড় অংশীদারি লাভ করে। বৈশ্বিক বাণিজ্যেও লন্ডন বিশেষ মর্যাদা অর্জন করে। নারীরা এ সময় গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে ধর্মীয়, কল্যাণমূলক কার্যক্রম এবং সামাজিক প্রক্ষাপটেও অংশগ্রহণ করতে থাকে। বিভিন্ন শিল্পে নারী শ্রমিক নিয়োগ শুরু হয়। তবে নারীদের ক্ষেত্র পুনরায় সংকীর্ণ হতে থাকে। 

১৩৫০ সাল থেকে ১৫০০ সাল পর্যন্ত নারীদের অর্থনৈতিক স্বর্ণ যুগ বিদ্যমান ছিল। এরপর মহামারির প্রভাব কাটিয়ে উঠলে ক্রমশ নারী শ্রমিকদেরও কাজের সুযোগ কমে যায়। ব্যবসা বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণও পুরুষের হাতে চলে যায়। তবে বর্তমান সময়ের নারীদের পূর্বসূরি হিসেবে ওই সময়ের নারীদেরকেই বিবেচনা করা হয়। মধ্যযুগে নারীর অর্থনৈতিক স্বর্ণ যুগে যারা স্বমহিমায় ভাস্বর ছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন-

 

স্বর্ণ যুগ তাদের হাত ধরেই এসেছিল

স্বর্ণ যুগ তাদের হাত ধরেই এসেছিল

১. আগ্নেস রামসে

মধ্যযুগের একজন নারী ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি। তার বাবা ছিলেন বিখ্যাত স্থপতি উইলিয়াম রামসে। তার স্বামীও ছিলেন স্থপতি। তবে আগ্নেস কখনো তার স্বামীর পরিচয় ব্যবহার করতেন না। বাবার মৃত্যুর পর আগ্নেস বাবার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি প্রতাপশালী রানি ইসাবেলার সঙ্গে চুক্তি করে তার সৌধ নির্মাণের কাজ করেন। যা স্থপত্যগুণে অনন্য। 

২. অ্যালিস হোলফোর্ড

অ্যালিস হোলফোর্ডের স্বামী নিকোলাস ছিলেন লন্ডন ব্রিজের পরিচালনা কর্তৃপক্ষের প্রধান। নিকোলাসের মৃত্যুর পর লন্ডন ব্রিজ পারিচালনার দায়িত্ব পালন করেন অ্যালিস। তিনি ২০ বছর সফলতার সঙ্গে এই দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মানুষ এবং পণ্য পারাপারের ক্ষেত্রে বিশেষ চার্জ আরোপের ক্ষেত্রে নিজের দক্ষতার পরিচয় দেন। 

৩. জোহানা হিল

তার স্বামী ছিলেন বেল-ফাউন্ডিং এর মালিক। ১৪০০ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি ব্যবসার পুরো দায়িত্ব বুঝে নেন। 

৪. এলেন ল্যাংউইথ

এলেন লন্ডনের সিল্কওমেন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার প্রথম স্বামীর মৃত্যু পর তিনি একজন দর্জিকে বিয়ে করেন। এলেন নিজের বুনন শিল্প গড়ে তোলেন এবং তা সফলতার সঙ্গে পরিচালনা করেন। তিনি রাজ পরিবারের পোশাকও সরবরাহ করতেন। তিনি সরাসরি ভেনিসের বণিকদের সঙ্গে বাণিজ্য করতেন এবং সেখান থেকে স্বর্ণের সুতা ও কাঁচামাল রেশম কিনে আনতেন।

আলোকিত লক্ষ্মীপুর
আলোকিত লক্ষ্মীপুর
//