৯ মিনিটে চুরি হয় একটি মোটরসাইকেল

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে মোটরসাইকেল চুরি। ৯ মিনিটে একটি করে চুরি হয়। সংঘবদ্ধ চোরদের দৌরাত্ম্যে অসহায় হয়ে পড়েছেন মোটরসাইকেলের মালিকরা। উপজেলার দশটি ইউপি ও পৌরশহরসহ আশপাশের এলাকায় একাধিক চক্র এ কাজে জড়িত। বিভিন্ন যান্ত্রিক প্রযুক্তির ব্যবহারসহ বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেও ঠেকাতে পারছে না চুরি।

গেল এক মাসে জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, দলীয় নেতা ও এনজিও কর্মকর্তারসহ অন্তত ২০টি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। এতে মোটরসাইকেল মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। চুরির ভয়ে অনেকেই নিজ শোয়ার ঘরে মোটরসাইকেল রেখে ঘুমান। এসব ঘটনায় থানায় পৃথকভাবে জিডি ও মামলা করা হয়েছে।

২৩ জানুয়ারি রাতে উপজেলার হায়দরগঞ্জ ফাঁড়ি থানা এলাকায় একটি ব্র্যাক অফিসের গ্যারেজের তালা ভেঙে ১১টি মোটরসাইকেলের মধ্যে পাঁচটি নিয়ে গেছে চোর চক্র। এ সময় অফিসে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় চোরেরা ৪৭ মিনিটে এ ঘটনাটি ঘটায়।

স্থানীয়রা জানায়, রায়পুরে তিন মাসে শতাধিক মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। এছাড়া অর্ধশতাধিক চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে। এসব মোটরসাইকেল অবাধে পৌরশহর ও আশপাশের উপজেলায় চলাচল করছে। একাধিক সংঘবদ্ধ চোর চক্র নকল চাবির সাহায্যে এসব ঘটনা ঘটায়। 

স্থানীয়রা আরো জানায়, শহরের হল রোড, নতুন বাজার এলাকা, পৌর কার্যালয়ের সামনের সড়ক, বাস টার্মিনাল, ফায়ার সার্ভিস অফিস সংলগ্ন এলাকা, বাসাবাড়ি বাজার, লেঙড়া বাজার, মিতালী বাজার, হায়দরগঞ্জের জনতা বাজার, কেরোয়া জোড়পুল এলাকা, সোলাখালী ব্রিজ এলাকাসহ বিভিন্ন ইউপির কয়েকটি এলাকায় বেশ কয়েকটি চক্র রয়েছে। এসব চক্রের সদস্যরা মোটরসাইকেল চুরি করে ধরা পড়লেও প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রচ্ছায়ায় পার পেয়ে যায়।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গেল এক সাপ্তাহে পৌরশহরের ব্যাপারী বাড়ি থেকে রোমান ও তছলিমের দুইটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। ৩১ জানুয়ারি ভোরে চরমোহনা ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের ঘরের দরজা ভেঙে মোটরসাইকেল নিয়ে যায়। ৩০ জানুয়ারি সকালে খাসেরহাট বাজার থেকে আওলাদ হাওলাদার নামে এক যুবলীগ নেতার মোটরসাইকেল চুরি হয়। এর আগে রাখালিয়ায় এনজিও’র দুই কর্মকর্তার দুইটি ও বাবুরহাটে একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। তবে এনজিও’র দুইটি ঘটনায় থানা মামলা হয়েছে এবং দুইটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

রায়পুরের ট্রাফিক পরিদর্শক জিল্লুর রহমান জানান, পৌরশহর ও আশপাশের এলাকায় প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি মোটরসাইকেল চলাচল করে। এর মধ্যে প্রায় তিন-চারশর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই। কাগজবিহীন এসব মোটরসাইকেলের বেশির ভাগই চোরাই। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা নিলে চুরি অনেক কমবে বলে দাবি করেন তিনি।

উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ বলেন, একর পর এক চুরির ঘটনায় আমরাও উদ্বিগ্ন। মোটরসাইকেল চুরির এ সিন্ডিকেট থেকে জনপ্রতিনিধিরাও বাদ পড়ছেন না।

রায়পুর থানার ওসি তোতা মিয়া বলেন, মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা ও জিডি হয়েছে। এরইমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।