ব্রেকিং:
চার বছর পর সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার? আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা লক্ষ্মীপুরে করোনা উপসর্গে প্রবাসীর মৃত্যু! লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে দিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে করোনা রোগী ৩৭ জন : নতুন করে শিশুসহ আক্রান্ত ৩ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের মারা যাওয়া তরুণের করোনা নেগেটিভ, তিন ভাই বোনের পজেটিভ লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিল এডভোকেট নয়ন লক্ষ্মীপুরে ত্রাণের সাথে ঘরও পেল লুজি মানসম্মত কোন ধাপ অতিক্রম করেনি গণস্বাস্থ্যের কিট পরিস্থিতি ঠিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যদের সাথে পুলিশ সুপারের ভিডিও কনফারেন্স লক্ষ্মীপুরে আরো ৩ জনের করোনা পজেটিভ আপনিকি করোনা পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিট ব্যবহারের বিপক্ষে? লক্ষ্মীপুরে ধান কেটে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিল ছাত্রলীগ লক্ষ্মীপুরে ২০০০ পরিবার পেল উপহার সামগ্রী
  • মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

লক্ষ্মীপুরের মতিরহাট মেঘনা বীচে বেলাভূমির পথে পথে

আলোকিত লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

ঢেউ আসে, ঢেউ খেলে। আছড়ে পড়ে তেপান্তরে। মোহনার পলিমাটি দিয়ে গঠিত এ বেলাভূমির কূল ছুঁয়ে সে দৃশ্য চমকে দেয় ভ্রমণ পিপাসুদের চোখ। বেলাভূমির সে পথ ধরে ঢেউয়ের কূল ছোঁয়ার দৃশ্য উপভোগ করতে করতে ভ্রমণ ছুটোরা হারিয়ে যান অচিনপুরে। মেঘনা বীচের এমন মন ভোলানো সৌন্দর্য দেখে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত কিংবা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভেবে ভুল করে ফেলেন অনেকে। তবে এটি যে এখানের মানুষের জন্য তেমন কিছুই, তা আবার কেউ অস্বীকার করতে পারেন না।

মেঘনা নদীর পূর্ব উপকূলে জেগে ওঠা এ সম্ভাবনাময় দর্শনীয় স্থানটির নাম মতিরহাট মেঘনা বীচ। এটি লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগরের চর কালকিনিতে অবস্থিত। ঢাকা, চট্টগ্রাম, ভোলা-বরিশালের এ নৌ-পথের তীরের এ বেলাভূমি প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। নদীর বুকে চোখজুড়ানো রঙিন জলরাশি, জলে ছোঁয়া মুক্ত শীতল বাতাসে উন্মাদনায় মেতে ওঠে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা।

বসন্তের মাতাল হাওয়ায় কেউ কেউ গানের দুনিয়ায় নিজকে হারিয়ে ফেলেন। সুর মাখিয়ে গলা ছেড়ে গান গায়। হাঁটেন বেলাভূমির বালুময় পথে পথে। মতিরহাট মেঘনা তীর রক্ষা বাঁধ থেকে দক্ষিণে মেঘনাতীরে এক কিলোমিটার পথ এমন বেলাভূমি। বিশাল প্রশস্ত এ তরে কেউ কেউ ফুটবল, ক্রিকেট উন্মাদনায় মেতে ওঠে।

বেলাভূমি

মতিরহাট মেঘনাতীরের বেলাভূমিতে ভ্রমণ পিপাসুরা

যা যা দেখতে পাবেন: নদীর বিশাল মোহনায় চোখ রাখলে দেখা বৈচিত্র্যময় নানান দৃশ্যপট। চোখে পড়বে ছোট-বড় নৌকা। ঢেউয়ের তালে তালে নৌকাগুলো নাচন করে। জেলেরা সে নৌকা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। মোহনায় জাল ফেলছে, ইলিশ ধরছে। সেগুলো আবার মাছ ঘাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসছে। ইলিশ শিকারের জন্য জেলেরা আগ থেকেই পরিকল্পনা করেন। প্রতিদিন জোয়ারের দুই সময়ে জেলা ইলিশ শিকারে নদীর বুকে ছোটেন। খুব কাছ থেকে নৌকার কল কল ধ্বনি শোনার সাথে সাথে দেখা যাবে জেলেদের ইলিশ শিকারের সেই চিরচেনা দৃশ্য।

বিশাল বেলাভূমি জেগে আছে

বিশাল বেলাভূমি জেগে আছে

 

মেঘনা বীচে আরেক আকর্ষণ দু’ধারের সবুজ প্রকৃতি। মেঘনা তীরের সবুজ গাছ-গাছালির দৃশ্য আর মেঘনা মোহনার নয়নাভিরাম দৃশ্য মিশে যেন একাকার। সকাল, দুপুর কিংবা সন্ধ্যে। সব সময় এমন দৃশ্য উপভোগ করতে ভিড় জমান বিভিন্ন বয়সী লোকজন।

তবে জোয়ারের সময় এ বেলাভূমি দেখা যায় না। আবার নদীর পানির তীব্রতা কম থাকলে সচরাচর এ দৃশ্যের দেখা মিলে। সকালে নদীতে যখন ভাটা থাকে, তখন সূর্যের বর্নিল আলো আকাশের সাথে মিশে এক অপরূপ দৃশ্যের সৃষ্টি করে। আবার সন্ধ্যের সূর্যাস্তও বেশ উপভোগ্য এ মেঘনা বীচে। এখানে সূর্যাস্তের দৃশ্যে যে কেউ হারিয়ে যেতে পারেন সমুদ্র সৈকতের সূর্যাস্তের দৃশ্যের সঙ্গে।

বেলাভূমিতে জোয়ারের দৃশ্যটাও দারুণ। জোয়ার যখন আসে, ক্রমান্বয়ে পুরো বেলাভূমিতে নিচ থেকে উপরে পানি উঠে। মুহুর্তের মধ্যেই বেলাভূমিতে পানি ভরে যাওয়ার দৃশ্যটা প্রাকৃতিক। যা যে কারো উপভোগ্য।

প্রাণখুলে উপভোগ করুন: প্রকৃতির অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যে গড়ে ওঠা এ স্থানটি ইতিমধ্যে নজর কেড়েছে কাছের ও দূরের দর্শনার্থীদের। ভ্রমণপিপাসু বহু দর্শনার্থী  ও ভ্রমণপিপাসু অনেক সংগঠনের পা পড়েছে মতিরহাটের এ মেঘনা বীচে। এখানের সুন্দর সৈকত যে কারো মনের গভীরে নাড়া দিবে। বিশাল বেলাভূমি নিয়েই এখানে সৈকত জেগে আছে। যে কেউ চাইলে বেলাভূমির পথ ধরে হাঁটতে পারবে বহুদূর। ইচ্ছে করলে নদীতে গোসল করতেও কারো জন্য মানা নেই। এখানে সৈকত ও বেড়িবাঁধ দু’টোই রয়েছে। আর নদীরপাড়ে নারকেল-সুপারির বিশাল বাগান তো আছেই। যেখানে বেলা কাটানো কোনো ব্যাপারই না।

 

কোথায় থাকবেন?  

 মতিরহাটে এখনো থাকার মতো কোন আবাসিক হোটেল গড়ে ওঠেনি। রাত্রী যাপনের জন্য অবশ্যই জেলা শহরকে বেছে নিতে হবে। জেলা শহরে উন্নত মানের বেশ কিছু গেস্ট হাউজ গড়ে উঠেছে। উন্নত মানের দুইটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। বাগবাড়িস্থ ঐতিহ্য কনভেশন ও স্টার গেস্ট হাউজ এবং চক বাজারস্থ সোনার বাংলা আবাসিক রেস্টুরেন্ট ও মুক্তিযোদ্ধা হাউজ অন্যতম। সেক্ষেত্রে আপনাকে খরচ আসবে ১৫’শ থেকে ২হাজার টাকা।

 

কোথায় খাবেন?

সকাল বা রাতের খাবারটা গেস্ট হাউজেই সেরে নিতে পারবেন।মজার ব্যাপার হচ্ছে, দিনের বেলায় যেহেতু ভ্রমণে আসবেন,  যেহেতু মতিরহাটের মেঘনাতীরে তাজা ইলিশ ভোজনে দুপুরের খাবারও খেয়ে নিতে পারবেন। আর মহিষের খাঁটি দধির স্বাদটাও নিতে ভুলবেন না। চাইলে নদীতীরের ঘাট থেকে ইলিশ আর হোটেল বা দধির দোকান থেকে দধি নিয়ে আসতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, ইলিশ যেমন তাজা, দধিও তেমন খাঁটি।

চিকচিক করে বাল, কোথাও নেই কাদা

চিকচিক করে বালু, কোথাও নেই কাদা

 

ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য সতর্কতা: সাধারণত নদীতে ভাটা থাকলে আপনি নদীতীরের বিশাল তর দেখতে পাবেন। কিন্তু জোয়ারের সময় তর একেবারেই ডুবে থাকবে। আপনি যদিও ভাটার সময় পা রাখলে, তবে আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে নদীর পানি বাড়ে কিনা। যদি পানি বেড়ে যায়, তাহলে পানির ডুবার আশঙ্কাও থাকছে। নদীতীর দিয়ে চলার সময় পা যেন পিছলে না পড়ে সেদিকেও খেয়াল রাখা দরকার। অনেক সময় নদীতে জোয়ারের ভাটা হয়। তখন তীর অনেকটা পিচ্ছিল থাকে। আর মেঘনাতীর কোন অবস্থাতেই যেন আপনার দ্বারা অপরিষ্কার না হয়। যেমন, চিপস, চানাচুরের প্যাকেট মেঘনাতীরে ফেলে আসা যাবে না। এতে নদী ও মেঘনাতীরের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

যেভাবে যাবেন মতিরহাট মেঘনাতীর : 

রাজধানী ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সড়কপথে বাসে করে কিংবা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে লঞ্চে করে চাঁদপুর হয়ে জেলার শহরের ঝুমুর স্টেশন, তারপর লক্ষ্মীপুর-রামগতি আঞ্চলিক সড়কের যেকোনও গাড়িতে তোরাবগঞ্জ নেমে সেখান থেকে মতিরহাট সড়ক দিয়ে মেঘনাপাড়ে পৌঁছান। লঞ্চে এলে খরচ পড়বে আসা-যাওয়া মোট ৮৯০টাকা আর সড়কপথে বাসে করে আসলে মোট আসা-যাওয়ার খরচ পড়বে ৯৭০টাকা।

আলোকিত লক্ষ্মীপুর
আলোকিত লক্ষ্মীপুর
//