ব্রেকিং:
চার বছর পর সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার? আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা লক্ষ্মীপুরে করোনা উপসর্গে প্রবাসীর মৃত্যু! লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে দিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুরে করোনা রোগী ৩৭ জন : নতুন করে শিশুসহ আক্রান্ত ৩ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের মারা যাওয়া তরুণের করোনা নেগেটিভ, তিন ভাই বোনের পজেটিভ লক্ষ্মীপুরে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিল এডভোকেট নয়ন লক্ষ্মীপুরে ত্রাণের সাথে ঘরও পেল লুজি মানসম্মত কোন ধাপ অতিক্রম করেনি গণস্বাস্থ্যের কিট পরিস্থিতি ঠিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ বিভিন্ন থানার পুলিশ সদস্যদের সাথে পুলিশ সুপারের ভিডিও কনফারেন্স লক্ষ্মীপুরে আরো ৩ জনের করোনা পজেটিভ আপনিকি করোনা পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিট ব্যবহারের বিপক্ষে? লক্ষ্মীপুরে ধান কেটে কৃষকের ঘরে পৌঁছে দিল ছাত্রলীগ লক্ষ্মীপুরে ২০০০ পরিবার পেল উপহার সামগ্রী
  • শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

মাটি যাচ্ছে ইটভাটায় বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

আলোকিত লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ১৫ মার্চ ২০২০  

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে দিনে দিনে অবৈধ ট্রলি এবং ব্রিক ফিল্ডের অত্যাচারের মাত্রা বেড়েই যাচ্ছে। উপজেলার ২১ টি ইট ভাটায় পরিবেশের আইন অমান্য করে ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ধানগাছ সহ ফসলি জমির মাটি কেটে ভাটায় ইট তৈরি করা হচ্ছে। এতে মাটির উর্বরতা শক্তি কমে ফসল উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। কোথাও কোথাও ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুর সমান গভীর করা হচ্ছে। ফলে বিলীন হচ্ছে  ফসলি জমি। অন্যদিকে জমির মাটি আনার নেয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রলির দানবীয় চাকায় পিষ্ট হচ্ছে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সদ্য সংষ্কার হওয়া সড়কসহ বিভিন্ন রাস্তাঘাট। জঞ্জাজলিতে যাচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন। ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে সরকারের।

এদিকে ট্রলি মাটি নেওয়ার সময় সড়কগুলোতে মাটি পড়ে সামান্য বৃষ্টিতেও সৃষ্টি হচ্ছে কাঁদা আবার রোদে ধুলাধুলিতে একাকার হয়ে পড়েছে। ফলে কোমলতলি শিক্ষার্থীরাসহ মানুষের যাতায়তে দূর্ভোগ চরম আকার ধারন করছে। ঘটছে অহরহ দূর্ঘটনা, অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে শিশু কিশোরসহ আবাল বৃদ্ধবনিতা। এ সমস্যার কারন হিসাবে ১৪টি অবৈধসহ ২১টি ইটভাটার মাটির চাহিদা মিটাতে অবৈধ ট্রলির চলাচলকে দায়ী করছেন সাধারন মানুষ।

সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে এসকল ইটভাটা। ফলে আশপাশের জমি থেকে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে উর্বর মাটি। একই সংঙ্গে ভাটাগুলোর জ্বালানী হিসাবে কয়লার পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে কাঠ। এতে করে বনজ সম্পদও উজাড় হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম শোশালিয়া, হানুবাইশ, নোয়াগাঁও, কাটাখালি, হাজিরপাড়া, কাঞ্চনপুর, পানিয়ালা, মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ রোড, ভোলাকোট, চন্ডিপুর, লামচর, ভাদুর, দরবেশপুর, কচুয়া,আলীপুর এলাকাগুলোর আবাদি জমির ওপরের অংশ এক থেকে দুই ফুট গর্ত করে কাটা হয়েছে। কোথাও কোথাও কোমর সমান গর্ত করে মাটি তুলে নেয়া হচ্ছে ইটভাটার জন্য। রামগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে রোপন করা ধানী জমির ধানগাছসহ মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে ইটভাটায়। মাটি কাটার কাজ দ্রুত করার জন্য রামগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় দানবীয় চাকার বুলডোজার ব্যবহার করতেও দেখা গেছে। আর এসব মাটি অবৈধ ট্রলিতে বোঝাই করে ইট ভাটায় নেয়া হচ্ছে। এতে অন্য জমিসহ সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

একটি সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ২১টি ইট ভাটায় প্রায় ৫শ থেকে ৫৫০ ট্রলি মাটি প্রয়োজন হয়।
এদিকে ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামে জনবসতি ও স্কুলের পাশে ৪টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটা মালিকদের নেই কোন বৈধ কাগজপত্র।

উপজেলার পঁচা মার্কেট থেকে সমেষপুর সড়কটি মাত্র ৮ মাস আগে নির্মান করা হয়। সড়কটি দিয়ে আথাকরা হাইস্কুল, মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ প্রতিদিন শত শত লোক চলাফেরা করে। এ সড়কটি দিয়ে গত ২ মাস থেকে মদিনা ইটভাটার মালিক ডিপজলের সহযোগিতায় মাটি ব্যবসায়ী মুন্সী মিয়া ১০/১৫টি ট্রলি ও ড্রাম পিকাপ দিয়ে মাটি আনা আনা নেওয়ায় করে। ফলে সড়কটি ভেঙ্গে খানাখন্দে ভরে যায় এবং ট্রলি থেকে মাটি পড়ে বৃষ্টি হলে কাঁদা ও রোদে ধুলাবালিতে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। মানুষের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রামগঞ্জ পৌরসভা সোনাপুর, পানিয়ালা চিতশি সড়কের সুধারাম ব্রীজের পাশের ইটভাটাগুলির আশপাশে একই অবস্থা দেখা যায়। এভাবে ভোলাকোট, ভাটরা, করপাড়া ,ভাদুর ইউনিয়নসহ পৌর সভার বিভিন্ন গ্রামের এমন চিত্র।

রাইসুল ইসলাম শাওন নামের এক পরিবেশবিদ জানান, সরকারী নিয়ম অনুযায়ী মজা পুকুর, খাল-বিল, নদ-নদী, চরাঞ্চল, পতিত ও আবাদী জমি থেকে মাটি কাটা নিষিদ্ধ থাকলেও তা মানছে না কেউই।

এছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে নির্মিত উপজেলা, ইউনিয়ন বা গ্রামীন সড়ক ব্যবহার করে কোন ভারী যানবাহন দিয়ে ইট বা ইটভাটার কাঁচামাল আনা নেয়া নিষিদ্ধ থাকলেও যথাযথ কর্তৃপক্ষ তা বন্ধ করছেন না। ইটভাটাগুলোতে কাঠের পরিবর্তে কয়লা ব্যবহারের কথা থাকলেও কোন ভাটা মালিকই তার তোয়াক্কা করছেন না।

সূত্রে মতে জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ২১ টি ইটভাটার মধ্যে ১৪টির অনুমতি নেই স্থানীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের। তারপরও এসব ইটভাটা মালিকগন কিভাবে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন সর্বমহলে।

স্থানীয় আনোয়ার হোসেন, বাবুল, ফরহাদসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, পচা মার্কেট- সমেষপুর রাস্তা প্রায় ৮মাস আগে সরকার ১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান করে। এখন সরকারী দলের কিছু লোক সুবিধা নিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাস্তাটি ভেঙ্গে পেলছে। ছাত্রছাত্রীসহ মানুষ খুব কষ্ট পাচ্ছে। ভেঙ্গে যখন ফেলবে করে লাভ কি।

মাটি ব্যবসায়ী মুন্সী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী মাটি নিচ্ছি। রাস্তায় যে মাটি পড়ে তা লেবার দিয়ে ফেলে দেওয়া হবে।
রামগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কৃষকদের মাটি বিক্রি না করার বিষয়ে সচেতন করার পরও তারা কথা শুনছেন না। একবার মাটি কাটা জমিতে আগের মতো উর্বরা শক্তি ফিরে আসতে কমপক্ষে ১০-১৫ বছর সময় লাগে। আর এভাবে মাটি বিক্রি অব্যাহত থাকলে এক সময় ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। খাদ্য শস্যের ঘাটতি দেখা দিবে কোন এক সময়।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান জানান, সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে ৭ টি ট্রলির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এদিকে লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের এমপি ড. আনোয়ার হোসেন খান জেলার রামগঞ্জ এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটা ও এসব ভাটাকে কেন্দ্র করে সড়কে চলাচলরত ট্রলি-ট্রাক্টর বন্ধের নির্দেশ প্রদানে জেলা প্রশাসনকে আহবান জানিয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তিনি এ পদক্ষেপের কথা জানান।

আলোকিত লক্ষ্মীপুর
আলোকিত লক্ষ্মীপুর
//