ভুমিহীন গণকবর ও সমাজসেবা সংস্থায় আর্থিক সাহায্যের আহ্বান

আমরা সমাজে কতরকম সংস্থা দেখতে পাই বা প্রতিনিয়ত কত সংস্থা গড়ে উঠে। এসব সংস্থাগুলোর নিজস্ব একটা লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে। আর সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন করা। মানুষকে সেবা দিয়ে বিনিময়ে তাদের কাজ থেকে লাভ করে নিচ্ছে লাভজনক সংস্থাগুলো।

কিন্তু মুনাফা অর্জন ছাড়াও যে সমাজে এমন কিছু সংস্থা আছে তা আমরা অনেকেই জানিনা বা জানতে প্রয়োজনবোধ করিনা। কারন আমরা ভালো কিছু করতে জানিনা আর ভালো কাজে এগিয়েও আসিনা।
অথচ এই ভালো কাজেই আমাদের ইহকাল ও পরকালে নাজাতের ব্যাবস্হা করবে।

আর সেই লক্ষ্যে লক্ষীপুর সদর থানার, ভবানীগন্জ ইউনিয়নের, পূর্ব চরমনসার (সুতারগোপটা বাজারের)
বেশ কিছু যুবক ছেলেরা মানব কল্যাণের জন্য একটি সেবামুলক সংস্থা গড়ে তুললো। তাদের সংস্থার নাম “ভুমিহীন গণকবর ও সমাজসেবা সংস্থা” তাদের এই সংস্থার উদ্দেশ্য হলো একটা ভুমিহীন মানষ যখন মারা যায় তখন তাকে তাদের নিজ দায়িত্বে দাফনের সকল কাজ সম্পন্ন করা।

সংস্থার সভাপতি মাহফুজুর রহমানকে জিজ্ঞেস করা হয় যে তারা কেন এই মহৎ উদ্যোগ হাতে নিলেন?
এই গনকবর কাদের জন্য??
জবাবে তিনি বলেন, লক্ষীপুর সদর মহাসড়কের দুই পাশে সরকারি জায়গায় হাজারো মানুষ বসবাস করে।
যাদের নাই কোন জায়গাজমি নাই। রাস্তার পাশে কোন রকম জায়গা নিয়ে একটা ছোট্ট ঘর করে তাতে তাদের জীবন পার করে। তাও আবার বড় বড় নেতাদের কাছ বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে লিজ নিয়ে এরা বসবাস করে। মাহফুজকে আরো জিজ্ঞেস করা হয় যারা এই রাস্তার পাশে বাস করে তাদের পূর্বের বাড়ি কোথায় ছিলো?

জবাবে তিনি বলেন এদের বেশিরভাগই নদী ভাঙ্গা পরিবার। একসময় এদের সব ছিলো বাড়ি ছিলো ঘর ছিলো কিন্তু আল্লাহ আজ সব কেড়ে নিয়ে পথের ভিখারি করে দিলো। মাহফুজ আরো বলেন কমলনগর, রামগতি,আলেকজান্ডারে প্রতি বছর নদী ভাঙ্গা বহাল রয়েছে যার কারনে যারা গরীব অসহায় তারা হয়তো জমি নিতে পারেনা তাই বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে কোন রকম ঠাঁই নেয়। আর বেশিরভাগই দেখা যায় চৌরাস্তা থেকে তোরাবগন্জ বাজার পর্যন্ত এই এরিয়াতে। অনেকসময় দেখা যায় রাস্তার পাশে থাকার কারনে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত লোক গাড়ি দূর্ঘটনায় মারা যায়।

আর তখনি তাদের কবর দিতে বেশিরভাগই সমস্যাই পড়তে হয়,যা একজন মৃত ব্যাক্তির জন্য খুব কষ্ট দায়ক। আমরা আমাদের এই ভুমিহীন গণকবর সেবা সংস্থার মাধ্যমে কিছুটা হলেও মৃত ব্যাক্তির জন্য শান্তি বয়ে আনতে পারবো বলে মনে করি।

সভাপতিকে তাদের সংস্থার জমি, টাকা পয়সার পরিমান জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন দেখেন, আমরা সবে মাত্র এই সংস্থাটি গড়ে তুলেছি, তাছাড়া আমরা যারা এই সংস্হার সদস্য তারা প্রত্যেকেই নদী ভাঙ্গা। আনাদের এখনো বড় কোন মুলধন হয়নি তবে আমরা মাসিক একটা চাঁদার ব্যবস্হা করেছি যেখানে মাসিক ধরা হলো সদস্য প্রতি ১০০ টাকা বর্তমানে আমাদের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬০-৭০ জন। আপাদত এই চাঁদাই আমাদের মুলধন। আমাদের মোট ১০০,০০০ লক্ষ টাকার মত জমা হয়েছে যা দিয়ে জমি কেনা সম্ভব না। তবে শীঘ্রই জমি কেনা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আর এর জন্য আমরা সমাজ,ছাত্র, চাকরিজীবী, প্রবাসী তথা সর্ব স্তরের সাহায্য কামনা করছি।

তিনি বলেন দেখেন আমরা প্রতিদিন কত টাকা খরচ করে ফেলছি, বাড়ি গাড়ি, দালানকোঠা, জমি জমার মালিক হচ্ছি। কিন্তু একদিন এইসব ছেড়ে আমাদেরকে ঐ অন্ধকার সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে চলে যেতে হবে। তিনি বুঝাতে চান এত টাকা পয়সা কিছুই কাজে আসবেনা যদিনা সেগুলো ভালো কোন কাজে ব্যাবহার না করা হয়। তার আবেদন তার সংস্হাটি কোন লাভজনক না তিনি মানব জাতির চির আবাসস্থল কবরের জায়গার জন্য সকলের কাছে সাহায্য কামনা করছেন। তিনি বলেন যার যা সামর্থ্য তা দিয়ে মানব কল্যাণমুলক কাজে সামিল হয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে সওয়াবের অংশীদার হতে পারেন।

সাহায্যের জন্য বিস্তারিত নিউজের পিকচারে দেওয়া আছে……