হাজিরহাট ইউনিয়ন আ’লীগের ওয়ার্ড কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতিকে বাদ দিয়ে ওই পদ থেকে প্রায় চার বছর আগে পদত্যাগ করা ব্যক্তির স্বাক্ষরে এসব ওয়ার্ডের ‘পকেট কমিটি’ গঠন করা হয়। দলীয় গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সহযোগিতায় এ অনিয়ম করা হয়েছে। হাজিরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকতার হোসেন মিলন সোমবার রাতে কমলনগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি অনিয়মের মাধ্যমে সদ্য গঠন করা ওইসব ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিল করে সাংগঠনিক নিয়মে নতুন করে কমিটি গঠনের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আকতার হোসেন মিলন জানান, হাজিরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ২০১৬ সালের ২০ মার্চ ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সভাপতির পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। ওই দিনই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট একেএম নুরুল আমিন রাজুর স্বাক্ষরিত পত্রে তাকে (আকতার হোসেন মিলনকে) হাজিরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পর থেকে সভাপতি হিসেবে তিনি দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি সংগঠনকে গতিশীল করতে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রায় চার বছর দায়িত্বপালনকালীন সময়ে সভাপতি হিসেবে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগে বর্ধিত সভা ও তৃণমূল আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভাসহ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলেও অংশ নেন। কিন্তু সম্প্রতি হাজিরহাট ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হলে মোয়াজ্জেম হোসেন নিজেকে সভাপতি দাবি করে পদপ্রত্যাশীদের মাঝে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু করেন। বিষয়টি তিনি (আকতার হোসেন মিলন) জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের জানালে তারা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু এরই মধ্যে মোয়াজ্জেম হোসেনের স্বাক্ষরে ৬টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ‘পকেট কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মো. নিজাম উদ্দিনসহ কয়েকজন নেতার সহযোগিতায় মোয়াজ্জেম হোসেন এ অনিয়ম করার সুযোগ পেয়েছেন বলে মিলন অভিযোগ করেন।
এ সময় তিনি অনিয়মের মাধ্যমে সদ্য গঠন করা ওইসব ওয়ার্ড কমিটি বাতিলসহ সাংগঠনিক নিয়মে নতুন করে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।
পদত্যাগ করেও নিজেকে পুনরায় সভাপতি দাবি করে ওয়ার্ড কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে মোয়াজ্জেম হোসেনের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি নয় বলে জানান।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট একেএম নুরুল আমিন রাজু জানান, সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী আকতার হোসেন মিলন হাজিরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। তাকে বাদ দিয়ে সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের স্বাক্ষরে কোনো ওয়ার্ড কমিটি গঠন হলে তা যথাযথ হবে না বলে মত দেন।
২০১৬ সালে আকতার হোসেন মিলনকে হাজিরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাস্টার জানান, দায়িত্বে অবহেলার কারণে মিলনের পরিবর্তে মোয়াজ্জেমকে দিয়ে ওয়ার্ড কমিটিগুলো গঠন করা হয়। তবে, এটি সাংগঠনিক নিয়মে হয়েছে কিনা-এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।